বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় মিছিলে গুলি বর্ষণের অভিযোগে এক অস্ত্রধারীকে পটিয়া আদালত চত্বরে পেয়ে গণপিটুনি দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী স্থানীয় ছাত্র–জনতা। গতকাল মঙ্গলবার দুুপুরে পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শিবির নেতার দায়ের করা মামলায় জামিন নিতে এসে ছাত্র–জনতার রোষাণলে পড়ে গণপিটুনির শিকার হন মো. রনি (৩৫)। তিনি পটিয়া পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণঘাটা এলাকার শফিউল আলম প্রকাশ বাটাম মিস্ত্রির পুত্র। জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে পটিয়া আল জামিয়া মাদ্রাসার ছাত্ররা মিছিল বের করলে মো. রনি পটিয়ার পল্লী বিদ্যুতের সামনে অস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিলকারীদের ওপর গুলি চালান বলে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়। এর আগে ১৮ জুলাই আন্দোলন চলাকালে পটিয়া সরকারি কলেজ গেটের সামনে অস্ত্রধারী রনি ছাত্রদের মিছিলে হামলা চালান বলেও অভিযোগ আছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। শিবির নেতা এনামুর রশিদের দায়ের করা মামলায় রনিকে আসামি করা হয়। উক্ত মামলায় গতকাল বেলা ১১টায় রনিসহ কয়েকজন পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে রনিসহ ২২ জনের জামিন মঞ্জুর করেন।
এ সময় আদালতে রনির উপস্থিতির খবর পেয়ে ছাত্র–জনতা আদালতের দিকে অগ্রসর হলে রনি সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার পথে পটিয়া সরকারি কলেজ মাঠে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের রোষানলে পড়ে। ছাত্র–জনতার হাতে তিনি গণপিটুনির শিকার হন। এক পর্যায়ে ছাত্ররা তাকে পটিয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরে ছাত্র–জনতা আদালতে গিয়ে আইনজীবীর কক্ষে বিক্ষোভ করলে আইনজীবীরা জামিনের আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে আদালতের জামিন বাতিল হয়ে যায়। পরে ওই মামলায় রনিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
তৌকির নামে এক শিক্ষার্থী জানান, রনি চিহ্নিত অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। আন্দোলনের শুরু থেকে তিনি ছাত্র–জনতার ওপর দফায় দফায় সশস্ত্র হামলা চালান। তার হামলায় গুরুতর আহত ৭ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী এখনো পর্যন্ত চিকিৎসাধীন। ৪ আগস্ট গুলি বর্ষণের ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্র গুলিবিদ্ধ হয়।
পটিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জিআরও ফোরকান মিয়া বলেন, ছাত্র আন্দোলনে হামলার আসামি রনিসহ ২২ জন আসামি জামিন চাইলে ছাত্রদের বিক্ষোভের কারণে আইনজীবীরা জামিন আবেদন প্রত্যাহার করে নেন। ফলে প্রত্যেকের জামিন বাতিল হয়।