ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি

প্রতিবাদ সমাবেশে শাহাদাত

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১২ আগস্ট, ২০২৪ at ৬:৩৯ পূর্বাহ্ণ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরামসহ যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী সন্ত্রাসীরা দীর্ঘ ১৬১৭টি বছর জনগণের উপর হত্যা নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়েছিল। তাদের জুলুম নির্যাতনের কারণে বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের অনেক নেতা ঘর ছাড়া হয়েছেন। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী চট্টগ্রাম শহরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। প্রকাশ্যে তারা অস্ত্র উঁচিয়ে খুন রাহাজানি ও নির্যাতন চালাত। গত ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে সাধারণ ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছিল। ছাত্রলীগ, যুবলীগের সেই গুলিতেই চট্টগ্রামে প্রথম শহীদ হয় চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম। শহীদ ওয়াসিম আকরাম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের একজন বীর। শহীদ ওয়াসিম আকরামের আত্মত্যাগ বাংলাদেশ যতদিন থাকবে তার নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে চট্টগ্রামে একের পর এক অনেক শহীদ হয়েছে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে। গতকাল রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামসহ যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে অবিলম্বে সকল হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন এ কথা বলেন।

শাহাদাত বলেন, শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ ওয়াসিম আকরাম, শহীদ মুগ্ধদের রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বৈরাচারমুক্ত করেছি। নতুনভাবে গণতন্ত্র পেয়েছি, মুক্তভাবে নিঃশ্বাস নিচ্ছি, মুক্তভাবে কথা বলছি, মুক্তভাবে চলাফেরা করছি। আর কেউ আমাদের টুটি চেপে ধরবে না। এই দেশের জনগণের আশাও আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়েছে এবং ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার এই বিজয় বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভাষা আন্দোলন করতে গিয়েও এত শহীদ হতে হয় নাই। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরুদ্ধে আন্দোলনেও এত শহীদ হয় নাই। কিন্তু স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার ১৬ বছর শাসন আমলে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের গুম, হত্যা, নির্যাতননিপীড়ন এবং পিলখানার হত্যাকাণ্ডে ৭৪ জন সেনা অফিসারদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। এই আন্দোলনের অন্যতম বীর চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরামের রক্ত বৃথা যায়নি। স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছে। প্রত্যেকটি হত্যাকাণ্ডের বিচার এই বাংলাদেশের মাটিতে হবে।

ডা. শাহাদাত হোসেন ছাত্রদলের নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, একটি ষড়যন্ত্রকারী চক্র ছাত্রজনতার বিজয়কে নস্যাৎ করতে পারে। তোমাদের চোখ কান খোলা রাখতে হবে। এলাকায় এলাকায় পাহারা বসাতে হবে যেন কোন ষড়যন্ত্রকারী, সন্ত্রাসী, অস্ত্রধারী হিন্দুবৌদ্ধখ্রিস্টান সমপ্রদায়ের উপাসনালয় ও ঘরবাড়িতে হামলা করতে না পারে। স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার অব্যাহত রাখতে পারলে আমাদের এই বিজয় সফল হবে।

চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাফরাশ নুরী সিজ্জির সভাপতিত্বে ও সাইফুল করিম আরিয়ানের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন নগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দীন সাহেদ, সামিয়াত আমিন জিসান, আমজাদ হোসেন শাকিল, মুহসিন কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন সারজিল, শরিফুল ইসলাম আবির, আমজাদ হোসেন জিহান, এনামুল হক, শাকের উল্লাহ, আজিজুল হক, নাইম ভুঁইয়া, মো. মঞ্জুর, শোয়াইবুল ইসলাম, আব্দুল কাদের ইভান, মো. নবাব, মো. শরিফ, মো. ইমতিয়াজ অমি, তাহমিনুল হক, মারুফুল ইসলাম প্রমুখ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরীর দুই স্থানে সড়কে ভেঙে পড়ল দুটি গাছ
পরবর্তী নিবন্ধইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিতে হামলা, গুলিতে আহত ৬