চকরিয়ার সুরাজপুর–মানিকপুর ইউনিয়নের পাহাড়তলী গ্রামে বাদাম গাছের পাতা খায় পাশের বাড়ির একটি ছাগল। সেই ছাগলকে বেঁধে রাখলে সমাধানের জন্য গড়ায় স্থানীয় ইউপি মেম্বারের কাছে। বিষয়টি সেখানেই সমাধান করে মালিকের কাছে ছাগলটি ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু গত শুক্রবার বিকেলের
মীমাংসিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফের দুই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয় গতকাল রাত ৯টায়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে উভয়পক্ষ জড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষে। এতে ধারালো অস্ত্রে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন ছাগলের মালিক কুলসুমা বেগম (৪৫) ও প্রতিপক্ষ হারুনুর রশিদের পুত্র মাদ্রাসা ছাত্র অমিত হাসান
(১৮)। দুইজনকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই মারা যান কুলসুমা বেগম। আহত অমিত হাসান বর্তমানে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহত কুলসুমা বেগম পাহাড়তলী গ্রামের নূর মোহাম্মদের স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তানের মাতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মাতামুহুরী নদীচরের ক্ষেত থেকে বাদাম তোলার পর গবাদী পশুকে খাওয়ানোর জন্য গাছের পাতা উঠানে এনে স্তুপ করে রাখেন পাহাড়তলী গ্রামের হারুনুর রশিদ। শুক্রবার বিকেলে পাশের বাড়ির নূর মোহাম্মদের স্ত্রী কুলসুমার পালিত একটি ছাগল গিয়ে সেই বাদাম গাছের পাতা খেতে
থাকে। এ সময় হারুন বিষয়টি দেখে ছাগলটিকে বেঁধে রাখেন। এই খবর পেয়ে ছাগলের মালিক কুলসুমা তার ছাগলটি ফেরত পেতে দ্বারস্থ হন স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মোহাম্মদ হানিফের কাছে। তখন উভয়পক্ষকে ডেকে নিয়ে তিনি বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। কিন্তু রাতে উভয় পরিবারের সদস্যরা জড়ান
সংঘর্ষে। এতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে কুলসুমা বেগম ও অমিত হাসান মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। তদ্মধ্যে কুলসুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
সুরাজপুর–মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম দৈনিক আজাদীকে বলেন, বিকেলে সমাধান করে দেওয়া বিষয় নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়িয়ে প্রাণ হারানোর মত ঘটনা বেশ দুঃখজনক। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যাতে নতুন করে আর কিছু না হয় সেজন্য সজাগ দৃষ্টি রয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, কুলসুমা নিহতের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হারুনুর রশিদের কন্যা জেমি আক্তারকে (১৯) আটক করা হয়েছে। অন্যদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে এই ঘটনায় এখনো (শনিবার বিকেল) পর্যন্ত কোনো পক্ষ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
