‘ছাগলরা’ চিহ্নিত করার আগেই ‘মতিউরদের’ ধরার দাবি সংসদে

| বৃহস্পতিবার , ২৭ জুন, ২০২৪ at ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ

সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে এনবিআর থেকে সরিয়ে দেওয়া মতিউর রহমানদের মত কারা আছেন, তা চিহ্নিত করার দাবি উঠেছে সংসদে। ঢাকা৮ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তাকর্মচারীদের মধ্যে এমন মতিউর আছে, ছাগল বা বোবা প্রাণী দ্বারা চিহ্নিত করার আগে তাদের চিহ্নিত করার প্রয়োজন। গতকাল বুধবার সংসদে ২০২৪২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। খবর বিডিনিউজের।

নাছিম বলেন, যারা রাজস্ব আদায়ের দায়িত্বে থাকেন যেমন মতিউরকে দুর্নীতি দমন কমিশন, গণমাধ্যম এমনকি আমরা যারা রাজনীতিবিদ আছি তারা চিহ্নিত করতে পারি নাই। তাকে একটি বোবা প্রাণী ছাগল চিহ্নিত করেছে। এমন মতিউর আরও আছে কিনা, যাদের ভবিষ্যতে ছাগল বা অন্য কোন বোবা প্রাণীর চিহ্নিত করার আগে তাদের চিহ্নিত করার প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট সংস্থার।

মতিউর ছাড়াও এই মুহূর্তে আলোচনায় আছেন পুলিশের সাবেক প্রধান বেনজীর আহমেদ, যার নিজের ও স্বজনদের নামে দেশের বেশ কিছু জেলায় বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। বেনজীরও তার স্বজনদের নিয়ে দেশ ছেড়েছেন বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন এসেছে। তারা দুর্নীতি দমন কমিশনের তলবে হাজির হননি। পরে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন পুলিশ কর্মকর্তাদের সম্পদের তথ্য প্রকাশ করায় উষ্মা প্রকাশ করে গণমাধ্যমে বিবৃতিও দেয়। এমন বিবৃতির কথা সরাসরি উল্লেখ না করেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন নাছিম। তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে, সেক্ষেত্রে তারা যেন এ বোবা ছাগলের বিপক্ষে দাঁড়িয়ে কথা বলা, বিবৃতি দেওয়া, পক্ষে নিয়ে প্রকারান্তরে দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তিকে রক্ষার নামে তাদের সংস্থার সকলের উপর দায়ভার না চাপায়, সেদিকে সকলের সজাগ থাকা প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কোনো রাজনীতিবিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অপকর্মের অভিযোগ আসে তখন রাজনীতিবিদরা পদক্ষেপ নেয় না বা পক্ষ নেয় না, বরং রাজনৈতিক পদক্ষেপ ও আইনি বিচারে সোচ্চার হয়। এটাই হল সৎ রাজনীতিবিদদের মহত্ত্ব। কিন্তু কখনো কখনো আমরা দেখতে পাই, যখন কোন সরকারি বা বেসরকারি, আধা সরকারি কিংবা সংস্থা বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার বিশেষ কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসে, তখন ওই গোষ্ঠী বা অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে দুর্নীতিবাজের পক্ষে সাফাই বক্তৃতা, বিবৃতি প্রদান করে। প্রকারান্তরে বিশেষ ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগের দায় কিন্তু ওই সংস্থাগুলো গ্রহণ করে। পুরো সংস্থার উপর চলে আসে এ দায়। এখান থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।

বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা বেসরকারি যে কোন দলের বা সংস্থার হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।

ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে ভবিষ্যতে ঋণ খেলাপি কমানোর দাবি জানান নাছিম। তিনি বলেন, ঋণ খেলাপি, অর্থ পাচারকারী, ব্যাংক লুটেরা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সিন্ডিকেট যারা করে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তাদের তালিকা প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। নাছিম বলেন, বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করে এই দুষ্টচক্র, সর্বগ্রাসী, স্বার্থান্বেষী চক্রের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেসরকারি শিক্ষকদের অবসরভাতা প্রাপ্তির সমস্যা সমাধানে সরকার আন্তরিক
পরবর্তী নিবন্ধশিক্ষিকার বেতের আঘাতেই কি নষ্ট হল শিশু আয়াতের চোখ