একের পর এক ইনজুরির কারণে ফ্রান্স দল মহা বিপদে পড়ে গিয়েছিল। সবশেষ দলের সবচাইতে বড় ভরসা করিম বেনজেমা ফিরে যান দেশে। কিন্তু নিজেদের প্রথম ম্যাচে তার ছিটেফোটা প্রভাব দেখা গেলনা ফ্রান্সের খেলায়। ঠিক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মতই আরেকটি বিশ্বকাপ শুরু করল ফ্রান্স। অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে রীতিমত খেলা করল দিয়ের দেশমের দল। যদিও শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছিল ফ্রান্স। কিন্তু কে জানতো সেই গোলটি তাতিয়ে দেবে ফ্রান্সকে। আর তাতেই ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে চ্যাম্পিয়নের মতই শুরু কল ফ্রান্স। জোড়া গোল করে কিংবদন্তি থিয়েরির অঁরির পাশে বসলেন অলিভিয়ে জিরুদ। আলো ছড়ালেন কিলিয়ান এমবাপে-আঁদ্রিও রাবিওরা। দাপুটে পারফরম্যান্সে বিশ্বকাপ অভিযানে দুর্দান্ত শুরু পেল ফরাসিরা। শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে সমতা আনেন রাবিও। এরপর জিরুদের গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় তারা। আর দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপে ব্যবধান বাড়ানোর পর শেষ গোলটি করেন জিরুদ।
শক্তি-সামর্থ্যে প্রতিপক্ষ অনেক এগিয়ে থাকলেও আগের দিন প্রত্যয়ী কণ্ঠে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়া গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। মাঠে নেমে শুরুটাও তারা করে আত্মবিশ্বাসী। দারুণ এক আক্রমণে এগিয়ে যায় নবম মিনিটে। ডান দিক থেকে ডি-বক্সে ম্যাথু লেকির বিপজ্জনক জায়গায় বাড়ানো বল প্রথম ছোঁয়ায় বাঁ পায়ের শটে গোলটি করেন ক্রেইড গুডউইন। এবারের বিশ্বকাপে এটাই সবচেয়ে দ্রুততম গোল। পিছিয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়ার উপর চাপ বাড়ায় ফ্রান্স। সাফল্য মেলে ২৭ মিনিটে। থিও এরনঁদেজের ছয় গজ বক্সের মুখে বাড়ানো ক্রসে হেডের সাহায্যে গোল করে সমতা ফেরান মিডফিল্ডার রাবিও।
জাতীয় দলের হয়ে প্রথম ২৭ ম্যাচে মাত্র একটি গোল করা রাবিও এই নিয়ে সবশেষ তিন ম্যাচে করলেন দুটি। এরপর আরও চাপ বাড়ায় ফ্রান্স। একের পর এক আক্রমণে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করে ফেলে । অস্ট্রেলিয়া অবশ্য দ্বিতীয় গোলটি হজম করে কিছুটা নিজেদের ভুলে। নিজেদের রক্ষণের ভুলে বল কেড়ে নেন রাবিও। এরপর এমবাপের ছোট্ট ব্যাকহিল পাস পেয়ে বক্সে ঢুকে তিনি বাড়ান পেনাল্টি স্পটের কাছে। আর ওখানে অনায়াসে প্লেসিং শটে ঠিকানা খুঁজে নেন জিরুদ। ৩৯ মিনিটে বাঁ দিক থেকে এমবাপের পাস পেনাল্টি স্পটের কাছে ফাঁকায় পেয়েও উড়িয়ে মারেন উসমান দেম্বেলে। এরপর এমবাপে মিস করেন আরও সহজ সুযোগ। ৬১ মিনিটে দারুণ এক আক্রমণ শাণায় ফ্রান্স।
জিরুদকে বল বাড়িয়ে এগিয়ে যান এমবাপে। ফিরতি পাস পেয়ে তার শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান অসি ডিফেন্ডার কাই রোলেস। ৬৮ মিনিটে তৃতীয় গোলের দেখা পায় ফ্রান্স। বাঁ দিক থেকে এমবাপের কোনাকুনি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে অন্য পাশে বল ধরে দেম্বেলে ক্রস বাড়ান ছয় গজ বঙে। লাফিয়ে হেড করেন পিএসজি তারকা এমবাপ্পে। বল পোস্টের ভেতরের দিকে লেগে জালে জড়ায়। ৭১ মিনিটে রেকর্ড ছোঁয়া গোলটি করেন জিরুদ। এমবাপের ক্রসে দারুন এখন শুরুর এই দাপুটে পারফরম্যান্স ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার পালা দুবারের চ্যাম্পিয়নদের সামনে।