আফগানিস্তান এবারের বিশ্বকাপে বড় অঘটন ঘটিয়ে দিল। গতকাল রোববার দিল্লিতে গতবারের চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে ৬৯ রানে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। প্রথমে ব্যাট করে আফগান ব্যাটাররা নিজেদের দাপট দেখালো। তারপর ইংলিশ ব্যাটারদের বিরুদ্ধে আফগান বোলারদের রাজত্ব চলল। ২৮৪ রান করে আফগানিস্তান। ইংল্যান্ড ৪০.৩ ওভারে শেষ হয়ে যায় ২১৫ রানে। টস জিতে আফগানিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন ইংরেজ অধিনায়ক জস বাটলার। লক্ষ্য ছিল দ্রুত উইকেট তুলে আফগানিস্তানকে কম রানে আটকে দেওয়া। কিন্তু দুই আফগান ওপেনার মিলেই তুলে নিলেন ১১৪ রান। ইব্রাহিম জাদরান যখন আউট হলেন, ততক্ষণে বড় রানের গন্ধ পেতে শুরু করে দিয়েছে আফগানিস্তান। কিন্তু পর পর উইকেট হারিয়ে সেই আশা কিছুটা ধাক্কা খায়। বিনা উইকেটে ১১৪ থেকে হঠাৎ আফগানিস্তানের স্কোর হয়ে যায় ১৫২ রানে ৪ উইকেট। আফগানিস্তানের বড় রান তোলার ভিতটা গড়েছিলেন রহমানুল্লা গুরবাজ। শতরান হাতছাড়া হলেও এই ওপেনার ৫৭ বলে ৮০ রান করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দলকে ভাল জায়গায় পৌঁছে দেন। মিডল অর্ডারে রান করেন ইকরাম আলিখিল। তিনি ৬৬ বলে ৫৮ রান করেন। শেষ বেলায় রান করেন মুজিব উর রহমান। তিনি ১৬ বলে ২৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে দলকে পৌঁছে দেন ২৮৪ রানের লড়াকু স্কোরে। ইংল্যান্ডের বোলারেরা ক্রমশ খেই হারিয়ে ফেলেন। নতুন বলে শুরু করা ক্রিস ওকসকে মাত্র ৪ ওভার বল করান বাটলার। সেই ৪ ওভারে ৪১ রান দিয়ে দেন ওকস। ৪ ওভারে ৪৬ রান দেন স্যাম কারেন। দলের অন্যতম প্রধান দুই বোলার রান দেওয়ায় বাটলারকে ভরসা করতে হয় লিয়াম লিভিংস্টোন, জো রুটের মতো অনিয়মিত বোলারের উপর। তাঁরা দুজনেই একটি করে উইকেট নেন। দলের সব থেকে সফল বোলার আদিল রশিদ। তিনি ৩ উইকেট নেন। মার্ক উড ৯ ওভারে ৫০ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। একটি উইকেট নেন রিচি টপলে।
২৮৪ রানের লক্ষ্য মাথায় নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড শুরুতেই হারায় জনি বেয়ারস্টোকে। ৪ বলে ২ রান করে আউট হন তিনি। বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি জো রুটও। আফগান স্পিনার মুজিবের বল হঠাৎ নিচু হয়ে যায়। বুঝতেই পারেননি ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক। বোল্ড হয়ে যান রুট। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেঞ্চুরি পাওয়া ওপেনার ডেভিড মালান ৩২ রান করে আউট হয়ে যান। এর পরেই ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডার ভেঙে পড়ে। জস বাটলার (৯), লিয়াম লিভিংস্টোন (১০) এবং স্যাম কারেন (১০) তেমন রান করতে পারেননি। লড়াই করছিলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু তাঁকে কেউ সঙ্গ দিতে পারেননি। এদিকে আফগানিস্তানের স্পিনারদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভাল বল করেন পেসারেরা। ফজল হক ফারুকি এবং নাভীন উল হক ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে রান করতে সমস্যা হচ্ছিল রুটদের। সঠিক লাইন, লেংথের সঙ্গে স্লোয়ারের ফাঁদে ফেলেন তাঁরা ব্যাটারদের। ২২ বছরের তরুণ স্পিনার মুজিবের বল বুঝতেই পারছিলেন না ইংরেজ ব্যাটারেরা। ১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন মুজিব। রশিদ খানও ৩ উইকেট নেন। ২ উইকেট পান মোহম্মদ নবি। ম্যাচ সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের মুজিব উর রহমান।
