চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থান থেকে সিএনজি চুরি করতো চক্রের কয়েকজন সদস্য। এরপর সে সিএনজিগুলো ক্রয় করতো আরেকটি গ্রুপ। পরবর্তীতে সেগুলোর ইঞ্জিন নাম্বার, চেসিস নাম্বার ও রঙ পরিবর্তন করে বিক্রি করতো তারা।
সিএনজিগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই, এগুলো চুরি করা সিএনজি। রুপ পরিবর্তন করে একদম নতুন বানিয়ে ফেলত। অনেকসময় আবার এগুলো বিআরটিএ’র কিছু অসাধু লোকের যোগসাজশে অন টেস্ট বানিয়ে নতুন রেজিষ্ট্রেশন করে সড়কে চালানো হত।
এভাবেই হারিয়ে যাওয়া সিএনজি’র মালিক তার মালিকানাধীন গাড়িটি আর কখনোই ফিরে পেত না। চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে অভিযান পরিচালনা করে ৩টি চোরাই সিএনজিসহ এ চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (উত্তর/দক্ষিণ)।
শুক্রবার (২৩ মে) রাত ১১ টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানাধীন বাদুরতলা এলাকার হাসানের ওয়ার্কশপ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। সেখান থেকে একটি সিএনজি ও পরবর্তীতে তাদের দেওয়া তথ্যমতে চান্দগাঁও থেকে ২টি চোরাই সিএনজির সাথে একাজে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়।
আজ শনিবার বিকেলে আয়োজিত সিএমপি’র দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর/দক্ষিণ) ডিসি হাবিবুর রহমান।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, কুমিল্লা জেলার চান্দিনার আব্দুল মতিন পাটোয়ারীর ছেলে মো. হাসান পাটোয়ারী (৩৭) ও ভোলা জেলার লালমোহনের রবু মোল্লার ছেলে মো. বিল্লাল হোসেন (৩৮)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, একটি চোরাই সিএনজি ক্রয় বিক্রয় করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের দেওয়া চমকপ্রদ তথ্যে এই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড উঠে আসে।
এ সময় পুলিশ চান্দগাঁওয়ের শরফতউল্লাহ পেট্টোল পাম্পের পিছনে নেজামের সিএনজির গ্যারেজ থেকে দুইটি চোরাই সিএনজিসহ ৩৫টি লেটার পাঞ্চ, একটি ড্রিল মেশিন, একটি নাম্বার প্লেইট, ২টি রিপিট গান, একটি হাতুড়ি, একটি প্লাস, একটি রেত ও সংশ্লিষ্ট কাজের একটি স্ক্রু ড্রাইভার উদ্ধার করে।
পুলিশ আরো জানায়, চোরাই সিএনজি গুলো প্রথমে তারা ইঞ্জিন নাম্বার ও চেসিস নাম্বার পাঞ্চ করে পরিবর্তন করতো। পরে অদ্ভুত এক নাম্বার লাগিয়ে নতুন রঙ করে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করতো। এরমধ্যে কিছু কিছু সিএনজি অন টেস্ট দেখিয়ে বিআরটিএ থেকে রেজিষ্ট্রেশনের মাধ্যমে নতুন নাম্বার নিয়ে নিত।
আবার কিছু সিএনজি একই নাম্বারে দুইটি চলতো। এ ঘটনায় ঐ গ্যারেজ মালিক নেজামকে আটক করা যায়নি। পুলিশ আসার খবরে তাৎক্ষণিক পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায় সে।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে চুরি ও প্রতারণা আইনে মামলা করেছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে তাদের সংশ্লিষ্ট থানার মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।