নগরীর রিয়াজউদ্দিন বাজারে দোকানের মালামাল চুরির অভিযোগে রমজান আলী রাসেল (১৯) নামে এক কর্মচারীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ এ ঘটনায় দোকান মালিকের ভাই আরমান ও কর্মচারী ইউনুসকে আটক করছে। গতকাল সোমবার দুপুরে এসএস টাওয়ারের আরাফাত এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি দোকানের গোডাউনে এই ঘটনা ঘটেছে। নিহত রাসেল নগরীর আইস ফ্যাক্টরি রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তিনি নেত্রকোনা জেলার আফাজ উদ্দিনের ছেলে। আফাজ উদ্দিনও মার্কেটে দিনমজুরের কাজ করেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে গতকাল রাত আটটায় নিহতের বাবা কোতোয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) শাহ মো. আব্দুর রউফ গতকাল আজাদীকে বলেন, এসএস টাওয়ারের নিচে আরাফাত এন্ড ব্রাদার্স নামে দোকান এবং তৃতীয় তলায় ওই দোকানের গুদাম। গুদামে আচার, দুধের প্যাকেটসহ বিভিন্ন মালামাল থাকে। সেই গুদামে রাসেল লোডিং-আনলোডিং কাজ করতেন। দোকান মালিকের অভিযোগ গোডাউন থেকে কিছু মালামাল চুরি হয়েছে। সেই মালামাল চুরির সন্দেহে রাসেলকে তৃতীয় তলার গোডাউনে বেঁধে বেধড়ক মারধর করা হয়। এডিসি রউফ বলেছেন, দোকানের মালামাল চুরির অভিযোগে তাকে প্রথম পর্যায়ে প্রচুর মারধর করা হয়েছিল। এ সময় তার কাছ থেকে কোনো স্বীকারোক্তি না পাওয়ায় পরে তার বাবা-মাকে মার্কেটে ডেকে আনা হয়। এরপর গোডাউনের দরজা লক করে তাদের সামনেই রাসেলকে দ্বিতীয় দফা মারধর করা হয়। মারধরের এক পর্যায়ে রাসেল সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। বাবা-মায়ের কাছে থাকা মোবাইল ফোনও কেড়ে নেয়া হয়েছিল। সেজন্য তারা কাউকে ফোন দিতে পারেননি। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ওই যুবককে মৃত অবস্থায় পান। এডিসি বলেন, মালামাল চুরি হলে আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু এভাবে কেউ আইন হাতে তুলে নিতে পারেন না।
কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার নোবেল চাকমা আজাদীকে বলেন, রাসেলকে মারধরের ঘটনায় দোকানের মালিক আরাফাত, তার ভাই আরমান ও ইউনুস নামে দোকানের এক কর্মচারী জড়িত ছিলেন। ঘটনার পর আরাফাত পলাতক রয়েছেন। আরমান ও ইউনুসকে আটক করেছে পুলিশ। আরাফাত (৩১) ও আরমান হোসেন (২৮) লোহাগাড়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের বদরপাড়া গ্রামের আশরাফ মিয়ার ছেলে। দোকান কর্মচারী মো. ইউনুসও (৩৫) একই উপজেলার বাসিন্দা।
রিয়াজউদ্দিন বাজারের ব্যবসায়ী আজাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, বেলা তিনটা নাগাদ রাসেলের মারা যাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। মারধর করার ফলে তার শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে গেলে তাকে এস এস টাওয়ারের ৩য় তলার একটি মেসে নিয়ে যাওয়ার সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। এই সময় রাসেলের বাবা-মাও ছিলেন। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়।