চুকবল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাচ্ছে কারা দল নিয়ে করা হচ্ছে লুকোচুরি, জানানো হয়নি সংবাদ মাধ্যমকেও

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২৯ জুলাই, ২০২৩ at ৫:১৭ পূর্বাহ্ণ

চুকবল বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে নতুন একটি খেলা। যদিও এই চুকবলটি কেবলই চট্টগ্রামভিত্তিক একটি স্পোর্টস এসোসিয়েশন। যার সভাপতি সিজেকেএস সাধারন সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক সিজেকেএস নির্বাহী সদস্য ওয়াহিদ দুলাল। যদিও খেলাটি এরই মধ্যে চট্টগ্রাম ছাপিয়ে দেশের আরো কয়েকটি জেলায় চর্চা হচ্ছে। কিন্তু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে আবেদন করলেও এখনো চুকবল এসোসিয়েশন ফেডারেশনের স্বীকৃতি পায়নি। তবে নিয়মিতই বিদেশ সফর করছে এই চুকবল এসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা। যেখানে খেলোয়াড়ের চাইতে কর্মকর্তা থাকেন বেশি। চুকবল এসোসিয়েশনের সব কর্মকর্থা চট্টগ্রামের হলেও এই চট্টগ্রামেও চুকবল খেলাটি তেমন চর্চা হয়ে সেরকম নজির নেই। তবে এবারে চেক প্রজাতন্ত্রে বিশ্ব চুকবল চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে যাচ্ছে এই চুকবল দলটি। যেকোন একটি দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাওা নিঃসন্দেহে গৌরবের ব্যাপার। কিন্তু এই চুকবল দলের ক্ষেত্রে সবকিছু হচ্ছে ব্যতিক্রমভাবে।

চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনের একটি রেওয়াজই হচ্ছে যেকোন দল দেশের বাইরেতো বটেই, দেশের অন্য কোন জেলায় খেলতে গেলেও সেটা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হয়। অথচ একটি দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাচ্ছে কিন্তু কেউ জানেনা কারা যাচ্ছে এই দলের হয়ে। এই দলটির যিনি কর্মকর্তা কল্লোল দাশ প্রথমে বললেন চুকবল এসোসিয়েশনটি চট্টগ্রামভিত্তিক একটি ক্রীড়া এসোসিয়েশন। আবার তিনি জানালেন যে দল খেলতে যাচ্ছে সেটি চট্টগ্রামের কোন সম্পৃক্ততা নেই। আজ দলটি ঢাকা থেকে রওয়ানা হবে চেক প্রজাতন্ত্রের উদ্দেশ্যে। কিন্তু এখনো কেউ জানেনা কারা কারা যাচ্ছে। যদিও কল্লোল দাশ জানিয়েছেন তারা চট্টগ্রাম ছাড়াও চাপাইনবাবগঞ্জ থেকেও খেলোয়াড় নিয়েছে। কিন্তু সে খেলোয়াড় কারা তার কোন উত্তর নেই।

এদিকে অভিযোগ পাওয়া গেছে দুটি দলের জন্য ভিসার আবেদন করা হয়েছিল। যেখানে একটি দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলবে। আরেকটি দল খেলতে ৪০ উর্ধ্ব দলে। কিন্তু অভিযোগ পাওয়া গেছে কারো পুরো পরিবার, কারো বেয়াই, বেয়াইন, কেউ কেউ আবার ষাটোর্ধ্ব, কারো ছেলে সন্তানকে খেলোয়াড় দেখিয়ে ভিসার আবেদন করা হয়। ফলে অনেকেই ভিসা দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। দলটির কর্মকর্তারা স্বীকার না করলেও তিন ক্যাটাগরীতে এই সফরের জন্য টাকা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এক গ্রুপের কাছ থেকে সাত লক্ষ টাকা। তাদেরকে দেখানো হয়েছে স্পন্সর হিসেবে। এক গ্রুপের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা। তাদেরকে অফিসিয়াল হিসেবে দেখানো হয়েছে। খেলোয়াড় এবং এসোসিয়েশন কর্মকর্তা হিসেবে যাদেরকে দেখানো হয়েছে তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে তিন লক্ষ টাকা করে। তারপরও কয়জনের দল যাচ্ছে, সেখানে খেলোয়াড় কয়জন কিংবা কর্মকর্তা কয়জন বা স্পন্সর হিসেবে কারা কারা যাচ্ছেন তার কোন তালিকা পাওয়া যায়নি। কল্লোল দাশের সাথে বারবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি দিচ্ছি দিচ্ছি বলে সময়টা পার করে দিয়েছেন। কিন্তু জানা যায়নি আদৌ কারা যাচ্ছে। এই দলটি এরই মধ্যে একাধিকবার বিদেশ সফর করেছে। কিন্তু সফর শেষে আর ফলাফল জানা যায়না। যাবেইবা কিভাবে। সেখানে গিয়ে খেলোয়াড় কর্মকর্তারা কেবলই ঘুরতে থাকে। শেষে দেশের নামটা ডুবিয়ে আসে। কারণ বাংলাদেশের জার্সি গায়ে দিয়েতো তারা বিদেশে খেলতে যায়। যদিও খেলার চাইতে বেড়ানোটাই বেশি হয়। এর আগে এই চুকবল দলটি মালয়েশিয়া সফর করেছিল। সেখানেও এ ধরনের অর্থ নিয়ে খেলার বাইরের লোকদের নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল দলটির বিপক্ষে। এবারেও যতঠুকু জানা গেছে কারো ছেলে, কারো ভাই, বন্ধু এবং আত্নীয় স্বজন যাচ্ছে খেলোয়াড়ের নামে। আবার সেখানে কারো কারো পরিকল্পনা জার্মানি, সুইজারল্যান্ড কিংবা ফ্রান্স ঘুরে আসারও। গতকাল এই চুকবল দলের বিদেশ সফর নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে। কারণ কেউ জানেনা কারা যাচ্ছে এই দলে। প্রশ্নটা বেশি উঠছে এই কারনে যে গত কিছুদিন আগে স্পেশাল অলিম্পিকের একটি দল জার্মানি গিয়ে সেখান থেকে অনেকেই ফিরেনি। প্রশ্নটা বড় হয়ে আসছে এ কারণেই যে খেলার নাম দিয়ে কেন বিদেশ সফর করা হবে। যারা বিত্তবান তারাতো এমনিতেই বিদেশ সফর করতে পারে। তবে একাধিক ক্রীড়া সংগঠক জানিয়েছেন, খেলাধুলার দল বললে হয়তো ভিসাটা সহজে পাবে। অন্যতায় পাওয়া যাবেনা। তাই এই অপকর্মের আশ্রয় নিয়ে থাকে অনেকেই। এখন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে যাওয়া চুকবল দল সে ধরনের কোন অপকর্মের আশ্রয় নিচ্ছে কিনা সেটা হয়তো সময়ই বলে দেবে। তবে বড় একটি প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখে চুকবল দল যাচ্ছে চেক প্রজাতন্ত্রে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৩৯ তম জাতীয় টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়নশীপ বালক ও বালিকা এককে চট্টগ্রাম চ্যাম্পিয়ন
পরবর্তী নিবন্ধবোরকা পরে সিনেমা হলে মৌসুমী