চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি আগামী সপ্তাহে চালু হতে পারে। চীন থেকে মেশিনটির একটি ব্যাটারি আসলেই অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হবে বলছে হাসপাতাল কর্তৃৃপক্ষ। এর আগে মেশিনটি মেরামতে হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি), ন্যাশনাল ইলেকট্রো–মেডিক্যাল ইক্যুইপমেন্ট মেইনটেন্যান্স ওয়ার্কশপ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার (নিমিইউ অ্যান্ড টিসি) এবং মেশিনটির সরবাহকারী প্রতিষ্ঠান মেডিটেল প্রাইভেট লিমিটেডকে ৩০ বার চিঠি লিখে। অবশেষে নিমিইউ অ্যান্ড টিসির উদ্যোগে মেশিনটি চালু হতে যাচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালে চমেক হাসপাতালে নষ্ট পড়ে থাকা এমআরআই মেশিনটি বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জাপানি হিটাচি ব্র্যান্ডের (১.৫ টেসলা) মেশিনটির মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। ঢাকার মেডিটেল প্রাইভেট লিমিটেড মেশিনটি সরবরাহ করে। হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের নিচতলায় ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর মেশিনটি স্থাপন শেষে উদ্বোধন করা হয়। মেশিনটির সেবা কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৮ সালের ১৯ এপ্রিল থেকে। তবে মেশিনটি ৩ বছরের ওয়ারেন্টির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই ২০২০ সালের অক্টোবরে অচল হয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে এমআরআই সেবা বন্ধ থাকার পর ২০২১ সালের মে মাসে মেরামত করে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। তবে মাস না যেতেই ফের অকেজো হয়ে পড়ে এই এমআরআই মেশিন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধই রয়েছে মেশিনটি।
এদিকে হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি দীর্ঘ সময় ধরে নষ্ট পড়ে থাকায় দরিদ্র রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। অনেক রোগী উপায় না দেখে ধার–দেনা করে বেসরকারি বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে এমআরআই পরীক্ষা করছেন। চমেক হাসপাতালে এমআরআই পরীক্ষা–নিরীক্ষায় ক্ষেত্রবিশেষে তিন হাজার ও চার হাজার টাকা ফি দিতে হলে বাইরের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খরচ পড়ছে ৮ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
চিকিৎসকরা বলছেন, মস্তিষ্কের বিভিন্ন স্নায়ু, টিউমার, স্ট্রোকসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য এমআরআইয়ের প্রয়োজন পড়ে। হাসপাতালে এমআরআই মেশিন সচল থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যে রোগ নির্ণয় করে রোগীদের দ্রুত সেবা দেয়া সম্ভব হতো। তবে এখন আমাদের রোগীরা সেই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রায় ৪ কোটি মানুষের একমাত্র ভরসাস্থল এই হাসপাতাল। দীর্ঘ সময় হাসপাতালের একমাত্র এমআরআই মেশিনটি নষ্ট থাকার কারণে গরীব রোগীরা কম খরচের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নষ্ট হওয়ার পর থেকে আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছি। এখন মেশিনটি অন্তত মেরামত করা হলেও রোগীরা পুনরায় সেবা পাবেন।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চীন থেকে এমআরআই মেশিনের একটি ব্যাটারি আসার জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। আমরা আশা করছি, আগামী সপ্তাহ থেকে মেশিনটি চালু করে কার্যক্রম শুরু করতে পারবো।