চীন সরকার জন্মহার বাড়াতে তিন বছরের কম বয়সী প্রতিটি শিশুর জন্য বছরে বাবা–মাকে ৩ হাজার ৬০০ ইউয়ান (৫০০ মার্কিন ডলার) দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এই প্রথম দেশজুড়ে এমন ভর্তুকি চালু করা হচ্ছে। বিবিসি লিখেছে, প্রায় এক দশক আগে বিতর্কিত এক–সন্তান নীতি বাতিল করার পরও চীনে জন্মহার ক্রমশ কমছে। খবর বিডিনিউজের।
নতুন এই আর্থিক প্রণোদনা কর্মসূচি প্রায় ২ কোটি পরিবারের জন্য শিশু প্রতিপালনের খরচ মেটাতে সহায়ক হবে। সোমবার ঘোষিত এই নতুন স্কিম অনুযায়ী, প্রতিটি শিশুর জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার ৮০০ ইউয়ান পর্যন্ত ভর্তুকি পাবে পরিবারগুলো। এই নীতি ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে অর্থাৎ, পেছনের তারিখ থেকেই কার্যকর ধরা হবে। তবে ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুদের পরিবারগুলোও আংশিক আর্থিক প্রণোদনার জন্য আবেদন করতে পারবে। চীনের সামনে আছে বিশাল জনমিতি সংকট। সেকারণে ইতোমধ্যেই কয়েকটি প্রদেশ সন্তান জন্মদানে উৎসাহ দিতে কোনও না কোনওভাবে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছে। গত মার্চে উত্তরাঞ্চলের হুহহট শহর ঘোষণা দেয়, তিনটি সন্তানের পরিবারগুলোতে প্রতি শিশুর জন্য ১ লাখ ইউয়ান পর্যন্ত দেওয়া হবে। রাজধানী বেইজিংয়ের পূর্বাঞ্চলীয় শহর শেনইয়াংয়ে তিন বছরের নিচের তৃতীয় সন্তানের জন্য মাসে ৫০০ ইউয়ান দিচ্ছে। শুধু নগদ প্রণোদনাই নয়, গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকার স্থানীয় প্রশাসনগুলোকে শিশুদের জন্য বিনামূল্যে প্রাক–প্রাথমিক শিক্ষা চালুর পরিকল্পনা তৈরির নির্দেশ দেয়।
চীনের ইউওয়া পপুলেশন রিসার্চ ইনস্টিটিউট–এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, তুলনামূলকভাবে সন্তান লালন–পালনের দিক থেকে বিশ্বের অন্যতম ব্যয়বহুল দেশ চীন। সেখানে একটি সন্তানকে ১৭ বছর বয়স পর্যন্ত বড় করতে গড়ে ৭৫ হাজার ৭০০ ডলার খরচ হয়। চীনের পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে দেশটিতে ৯৫ লাখ ৪০ হাজার শিশু জন্ম নিয়েছে, যা আগের বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও দেশটির জনসংখ্যা টানা তৃতীয় বছরের মতো কমেছে। দেড়শ কোটি জনসংখ্যার দেশটিতে দ্রুত বার্ধক্যও জন্মহার হ্রাসজনিত উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।