রাঙ্গুনিয়ার সরফভাটায় বাড়িতে গিয়ে বড় ভাইকে না পেয়ে ছোট ভাইকে মায়ের সামনে গুলি করে হত্যা এবং গ্রামবাসীকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় এলাকায় আতংক কাটছে না। উপজেলার সরফভাটা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দুরখিল গ্রামে মঙ্গলবার রাতে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহত মোজাহেরুল ইসলাম (৩০) ওই এলাকার মো. হারুনের ছেলে। হামলাকারীরা ফেরার পথে স্থানীয় একটি চায়ের দোকানে থাকা পাঁচ গ্রামবাসীকেও কুপিয়ে জখম করে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত ও আহত পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী গেলে গ্রামবাসী এই ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান। পাশাপাশি সন্ত্রাসমুক্ত নিরাপদ সরফভাটা গড়তে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদেরও জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এসময় প্রত্যক্ষদর্শী ও ঘটনায় হতাহতরাও সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন। পুত্র হারানো মায়ের কান্নায় এসময় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। মো. করিম উদ্দিন নামে গ্রামের একজন বাসিন্দা বলেন, একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ে লুকিয়ে থেকে খুন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে।
তাদের কারণে শান্তিপ্রিয় এলাকার জনসাধারণ আজ আতংকে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। শুধুমাত্র সরফভাটা সিরিয়া গ্রাম থেকেই তাদের ভয়ে ৫৬ পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। এভাবে পুরো সরফভাটার শতাধিক পরিবার আজ তাদের ভয়ে এলাকাছাড়া। যারা আছেন, তারাও আতংকে দিন কাটাচ্ছেন।
রহিম মিয়া নামে অন্য একজন বলেন, তারা কিছুদিন পর পর এক একটি চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা ঘটায়। পুলিশ মামলা নেয়, কিছুদিন তৎপর থাকে। তারপর তারা আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। গ্রেপ্তার হলেও কিছুদিন পর বেরিয়ে এসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। এভাবে তো চলতে দেয়া যায় না।
এই ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শেখ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, একটি পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পরও মধ্যযুগীয় কায়দায় এমন বর্বর হামলা মেনে নেয়া যায় না। সময় এসেছে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের প্রতিহত করার। আশাকরি এবার অন্তত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে। সরফভাটার আপামর জনসাধারণও চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে মুক্তি পেতে চায় বলে তিনি জানান।