চিরিঙ্গায় এক কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক

ছোটন কান্তি নাথ, চকরিয়া | শনিবার , ১ জুন, ২০২৪ at ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ

চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র চিরিঙ্গায় বিদ্যমান চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কের দুই পাশে পাঁচ ফুট করে উভয়দিকে ১০ ফুট প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়েছে। কয়েকবছর আগে এই পরিকল্পনা হাতে নেওয়ার পর অবশেষে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) চকরিয়া পৌরশহরের চিরিঙ্গাস্থ উত্তরাংশের সওজ কার্যালয়ের সামনে থেকে দক্ষিণাংশের থানা রাস্তার মাথা পর্যন্ত মহাসড়কটির বক্স রোডের বর্ধিতাংশের কাজ শুরু করেছে কয়েকদিন আগে। এজন্য ঠিকাদারও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সরজমিন দেখা গেছে, চকরিয়া পৌরশহরের ওপর দিয়ে বিদ্যমান সড়কটির মাঝখানে নির্মিত বক্স রোডের দুই পাশে পাঁচ ফুট করে বর্ধিত বা প্রশস্তকরণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এজন্য শহরের পূর্বাংশের অতীতের আরসিসি সড়কের ঢালাই ভাঙার কাজ চলমান রয়েছে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যতে চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কটি চার বা ছয় লেনে রূপান্তর করা হবে, এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। তবে বিদ্যমান চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র চিরিঙ্গার ওপর দিয়ে যদি চার বা ছয় লেনের কাজ বাস্তবায়ন করতে হয় তাহলে ব্যাপক স্থাপনা উচ্ছেদের কবলে পড়বে। তাই পৌরশহর চিরিঙ্গাকে পাশ কাটিয়ে চকরিয়া কলেজ পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কাকারার লোটনী, হাজিয়ান, দিগরপানখালী হয়ে ফাঁসিয়াখালীর হাসেরদিঘী পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে চার বা ছয় লেনের বাইপাস সড়ক। আর এই বাইপাস মূল সড়কে গিয়ে মিলিত হবে। ইতোমধ্যে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা) তাদের অর্থায়নে এই বাইপাস নির্মাণের জন্য পিজিবিলিটি স্টাডিও সম্পন্ন করেছেন। ২০২৫ সালের পরে এই বাইপাস সড়ক নির্মাণের কথা রয়েছে।

কক্সবাজার সড়ক বিভাগের অধীনস্থ সড়ক ও জনপথ বিভাগ চকরিয়া কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (এসও) সাইফুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে জানান, চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কের বিদ্যমান চকরিয়া পৌরশহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্র চিরিঙ্গায় প্রতিনিয়ত যান ও জনজট লেগেই থাকে। তার ওপর মহাসড়কে দিব্যি দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রী উঠানামা করার কারণে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করে। চিরিঙ্গায় মহাসড়কটির দুই পাশে পাঁচ ফুট করে ১০ ফুট পর্যন্ত প্রশস্তকরণ বা বর্ধিতকরণের কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রশস্তকরণের এই কাজ সম্পন্ন হলে মহাসড়কটির এক কিলোমিটার পর্যন্ত ৩৪ ফুটে রূপান্তরিত হবে। বর্তমান এটির প্রস্থ হচ্ছে ২৪ ফুট।

তিনি বলেন, এক কিলোমিটার পর্যন্ত প্রশস্তকরণের এই কাজ বাস্তবায়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এজন্য নিপা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। এই কাজ বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে আশা করা যাচ্ছে চকরিয়া পৌরশহরের চিরিঙ্গায় যানজট কিছুটা হলেও কমে আসবে।

তবে চকরিয়া পৌরশহরের সচেতন একাধিক ব্যক্তি দৈনিক আজাদীকে বলেন, পৌরশহরের চিরিঙ্গায় সড়কটির দুই দিকে পাঁচ ফুট করে প্রশস্ত করা হলেও যানজট আগের মতোই লেগে থাকবে। কারণ মহাসড়কটির দুই পাশের বিদ্যমান আরসিসি ঢালাইয়ের সড়কটি পাঁচ ফুট করে সংকুচিত হয়ে যাবে। এতে বর্তমানে যেভাবে ইউনিয়নভিত্তিক গাড়ির স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে ভবিষ্যতে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। তার ওপর পৌরসভার বসানো ফুটপাতের হকারদের উৎপাত তো রয়েছে।

মহাসড়কটিতে দীর্ঘসময় ধরে চলাচলকারী দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের একাধিক চালক দৈনিক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামকক্সবাজার মহাসড়কটির মাতামুহুরী সেতু পার হওয়ার পর দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়। কারণ অনিয়ন্ত্রিত সড়কটিতে অল্প দূরত্বের যাত্রী বহনকারী তিন চাকার যানবাহন থেকে শুরু করে চার চাকার হাইয়েজমাইক্রোবাস, লেগুনা মহাসড়কের ওপর দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা করতে দেখা যায়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবার টাইগারদের প্রতিপক্ষ ভারত
পরবর্তী নিবন্ধরাঙ্গুনিয়ায় সড়কে ‘মরণ ফাঁদ’সারি সারি মরা গাছ