চিরতরে দখল-চাঁদাবাজি নির্মূলই কাম্য

ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী | শনিবার , ২৪ আগস্ট, ২০২৪ at ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ

অর্থক্ষমতালিপ্সু নষ্ট চরিত্রের কথিত প্রভাবশালীদের পৃষ্ঠপোষকতায় বিগত সময়ে দখলচাঁদাবাজদের নিয়ন্ত্রণে ছিল পুরোদেশ। এমন কোন ক্ষেত্র ছিল না যাতে নৈরাজ্যের ছায়া পড়েনি। দুর্বৃত্তায়নের কবলে পড়ে দেশের সাধারণ মানুষের জীবনপ্রবাহ ছিল ওষ্ঠাগত। যন্ত্রণাক্ষোভের সমষ্টি গণরোষে রূপান্তরিত হওয়া সম্পর্কে বিজ্ঞজনদের সতর্ক পরামর্শ ছিল উচ্চকিত। স্বেচ্ছাচারিতাদাম্ভিকতার বেপরোয়া আচরণে সকল শ্রেণির নাগরিক নির্দয় কাতরতায় দিনাতিপাত করেছে। সচেতন মহলের লেখনিবক্তব্যে বিপুল প্রকাশ পেলেও সংশ্লিষ্ট মহল কিছুই আমলে নেয় নি। ফলশ্রুতিতে কোটা বৈষম্যের যৌক্তিক আন্দোলন ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের রূপ পরিগ্রহ করে। ইতিমধ্যেই অন্তর্বর্তী সরকারের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা শান্তিতে নোবেল জয়ী বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে। জাতিসংঘের সহযোগিতায় সত্যনিষ্ঠ বিচার কার্যক্রমে সকল প্রকার দমনপীড়নমামলাহামলাহত্যাগণহত্যার বিচারের দাবি জোরালোভাবে উত্থাপিত। আপামর জনগণের আশাজাগানিয়া এক নতুন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতার অঙ্গীকার সুপ্রতিষ্ঠিত।

পৃথিবী নামক এই গ্রহে উন্নতউন্নয়নশীলঅনুন্নত প্রায় প্রতিটি দেশই পরিবেশ বিপর্যয়ে প্রবল আক্রান্ত। ঘূর্ণিঝড়বন্যাখরাজলোচ্ছ্বাসদাবানলসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রধান কারণ হচ্ছে পরিবেশ দূষণের নির্দয় প্রতিক্রিয়া। ব্যক্তিগোষ্ঠী স্বার্থে অপরিকল্পিত শিল্পায়ননগরায়ণ কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য ছিল না। জনসংখ্যাবৃদ্ধিঅবাধ বৃক্ষরাজি নিধনপাহাড় পর্বত ধ্বংস, আবাসনবিনোদনপর্যটন বা পশুতুল্য মানবদানবদের অর্থলিপ্সুুতা চরম হিংস্র পর্যায়ে পৌঁছেছিল। জনঅধ্যুষিত বাংলাদেশ হয়েছে অনাধুনিক নগরায়ণ বা সীমিত শিল্পায়নের যাঁতাকলে প্রচন্ড বিপর্যস্ত। ভূপ্রাকৃতিক অবস্থানে ‘বদ্বীপ’ হওয়ায় প্রতিবছর প্রায় অর্ধেক সময়ে ঘূর্ণিঝড়অতিবৃষ্টিঅনাবৃষ্টিবন্যাজলোচ্ছ্বাসনদীভাঙ্গনজলাবদ্ধাতার নিত্যনৈমিত্তিক সমস্যাগুলো দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির অর্জনকে মারাত্মক ব্যাহত করে চলছে। অতীতে জনদুর্ভোগ লাঘবে সাময়িক ব্যবস্থাপত্র গ্রহণ করা হলেও দুর্যোগ মোকাবেলায় টেকসই কর্মকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন তেমন দৃশ্যমান ছিল না। পক্ষান্তরে ভূমিজলনদীসমুদ্রের চর দখল এবং স্থাপনা নির্মাণে বিগত প্রায় সরকারদলের হাতেগোনা কতিপয় দুর্বৃত্তের কারণে পরিস্থিতির উন্নয়ন পরিলক্ষিত হয়নি।

ছোটখাট ডোবাপুকুর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর অতিপ্রয়োজনে কিছুটা লোপাট হলেও বড় বড় দিঘীজলাশয় ভরাট এবং সন্ত্রাসমূলক কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে আবাসন প্রকল্পসহ শিল্পকারখানাবস্তিবসতিমার্কেট স্থাপন ইত্যাদি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পবিত্র সংবিধান সম্মত বিভিন্ন বিধিবদ্ধ আইন থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপাদমস্তক দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারিবেসরকারি সংস্থাকর্মকর্তাস্বঘোষিত সন্ত্রাসী রাজনীতিকদের বাহিনীভিত্তিক অবৈধ কর্মকান্ডে আইনের প্রয়োগ ছিল অত্যন্ত দুর্বল। দেশের স্ব স্ব অঞ্চলের শহরনগরপ্রান্তিক জনপদে চিহ্নিত স্বল্প সংখ্যক অপরাধীদের বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনপ্রাণনাশঘুষের বিনিময়ে নানাভাবে আইনি জটিলতায় ফাঁসিয়ে দেওয়াসম্মান বা ভাবমূর্তি খোয়ানোঅবাঞ্চিত হয়রানির ভয়ে সচেতন মহল কিছুটা সোচ্চার হয়েও পরক্ষণে কুটিল এসব চক্রান্তে প্রায়ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হয়। ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভূমিকা পালনের বিপরীতে সমাজে সৎযোগ্য ব্যক্তিবর্গের ইতিবাচক উদ্যোগগুলো বরাবরই পরাস্তপরাজিত হয়েছে।

নিকট অতীতে মসজিদমন্দিরপ্যাগোডাধর্মীয় প্রতিষ্ঠানশতবর্ষী কবরসমাধিস্থলশ্মশানের জায়গাটুকু দখল ও ক্রয়বিক্রয়ে সন্ত্রাসীদের দৌরাত্ম্য জনগণের মধ্যে যারপরনাই আতঙ্ক তৈরি করেছিল যা এখনো বিপুল অনুভূত। মৌরুসীপৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত সামান্য বাড়িভিটে রক্ষা করা নিয়েও তারা ছিল চরম ভীতসন্ত্রস্ত। অসহায়নিরীহনিঃস্বসম্মান ও সুনামের অধিকারী ব্যক্তিবর্গের কাতরতার করুণ আর্তনাদের দীর্ঘশ্বাসে গণপরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। সরকারের পক্ষ থেকে পরিবেশ দপ্তরইউনিয়নউপজেলাসিটি কর্পোরেশনসিডিএ বা রাজউকের মতো প্রতিষ্ঠান প্রত্যেক অঞ্চলে বিদ্যমান থাকলেও জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতান্তই দুর্বিষহ। কিছুক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুটিকয়েক অনৈতিক কর্মকর্তার কর্মযজ্ঞ অপরাধীদের পক্ষে অপাংক্তেয় পন্থা অবলম্বন করে বিষয়সমূহ আরো জটিল করে তোলার দৃষ্টান্তও কম নয়।

দেশ ও জাতির বৃহত্তর কল্যাণপরিবেশ বিপর্যয় বিচেনায় নদনদী, জলাশয় রক্ষায় নাগরিক সচেতনতা গড়ে তোলার উদ্যোগসহ এ ব্যাপারে বহু আইন ও দিকনির্দেশনা থাকার পরও অসুস্থ প্রতিযোগিতাযথাযথ কর্তৃপক্ষের অবজ্ঞাউদাসীনতানীরবতায় দেশের জলাশয়গুলো দখলভরাট বন্ধ করা যাচ্ছিল না। অবৈধহীন এসব ভরাটদখলের বিরুদ্ধে পরিবেশবাদীএলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহে বারংবার আপত্তিঅভিযোগ করেও এর কোন প্রতিকার পায়নি। ফলশ্রুতিতে সরকারি গৃহীত পদক্ষেপগুলো দখলবাজদের দৌরাত্ম্যে নস্যাৎ হয়ে গেছে। প্রাকৃতিক জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুরজলাশয়নদীখাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। আইনের ৫ ধারায় বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন বা অন্য কোনোভাবে ব্যবহারভাড়াইজারা বা হস্তান্তর বেআইনি। কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করলে আইনের ৮ ও ১২ ধারা অনুযায়ী পাঁচ বছরের কারাদন্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয়দন্ডে দন্ডিত হবেন। ২০১০ সালে সংশোধিত আইন মতে, যেকোনো ধরনের জলাশয় ভরাট করা নিষিদ্ধ। এছাড়াও ২০০০ সালের ২২ মে জারি করা অফিস আদেশে বলা হয়েছে, কোনো অবস্থাতেই খালবিল, নদীনালা, পুকুর ও প্রাকৃতিক জলাশয়ের স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি পরিবর্তন করা যাবে না। এমনকি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নকালে খালবিল, পুকুর, নালাসহ প্রাকৃতিক জলাশয়/জলাধার বন্ধ করা যাবে না।

আমাদের সকলের জানা, দেশে জায়গাজমির দাম ও চাহিদা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে একশ্রেণির মানুষ ভূমির প্রতি সীমাহীন লোভলালসার বশবর্তী হয়ে সরকারি খাস জমি থেকে শুরু করে ব্যক্তিমালিকানাধীন এবং বিভিন্ন সামাজিকধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জায়গাজমি জালজালিয়াতির মাধ্যমে নির্দ্বিধায় দখল করে নিয়েছে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, জলাশয়ের অপরিকল্পিত উন্নয়নঅবৈধ দখল ও ভরাটে পরিবেশ বিপর্যয়প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। জলাশয় ভরাটের ফলে দেশে বৃষ্টির পানি ধারণক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। বিশেষ করে হাওড় অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ভরাট হয়ে যাওয়ায় অতিবৃষ্টিতে বন্যার প্রবণতা বহুলাংশে বেড়ে গেছে। এছাড়াও দেশে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য ধ্বংসঅস্বাভাবিক তাপমাত্রাতাপদাহখরাঅতিবৃষ্টিঅনাবৃষ্টিমাটির আদ্রতা হ্রাসপানি স্বল্পতার মতো নানামুখী সংকটে নিপতিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, গত ৩০ বছরে দেশের বড় বড় শহরনগরে প্রতিবেশব্যবস্থা দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এখানে পুকুরদিঘি ও অন্যান্য জলাশয় এবং সবুজ এলাকা কমে জীববৈচিত্র্য ধ্বংস হয়েছে। ফলে শহরগুলোতে তাপমাত্রা বাড়ছে এবং বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠছে যা দেশবাসীকে গভীর উদ্বেগউৎকণ্ঠায় নিপতিত করেছে। বিদ্যমান জলাশয় সংরক্ষণের পাশাপাশি নতুন করে পুকুরদিঘি খননের উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য বিপর্যয়মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক হবে বলেও তারা মতামত ব্যক্ত করেন।

এটি প্রতিষ্ঠিত সত্য যে, যেকোনো নগরশহরঅঞ্চলের মানুষের জন্য পুকুরদিঘি বা অন্যান্য জলাশয় অনেকটা আশীর্বাদ হিসেবে প্রতিভাত। এসব জলাশয়ের নান্দনিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিসামাজিকঅর্থনৈতিকপরিবেশগতশিশুর বেড়ে ওঠামানুষের জীবনমান সমুন্নত রাখাসহ বিভিন্ন বিবেচনায় আলাদা গুরুত্ব বহন করে। পুকুরের পানি অনেক ধরনের পরিবেশবান্ধব গাছপালা এবং জীবজন্তুর জীবনপ্রণালীতে সহায়কের ভূমিকা পালন করে থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ছাড়াও অগ্নিকান্ডের সময় অগ্নিনির্বাপণের অতিপ্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ পানির সংস্থানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই পুকুরদিঘির মতো জলাশয়ের অনন্য অবদান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভূগর্ভে পানি ঢোকার অন্যতম প্রাকৃতিক পথও হচ্ছে পুকুরদিঘি বা এ ধরনের জলাশয়সমূহ। এই পথের সচলতায় পানির স্তর একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থানে থেকে সকল প্রাণীকূলকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করে। অধিকন্তু অনেক এলাকায় জলাশয়গুলো পানি ধরে রাখার ও পানি সরে যাওয়ার প্রাকৃতিক ব্যবস্থা হিসেবে অতিশয় কার্যকর। ফলশ্রুতিতে বৃষ্টির সময় বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কামুক্তসহ নানারকম ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়।

গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য মতে, ৫ আগস্ট ২০২৪ ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার পালাবদলের পর কয়েক দিন দেশব্যাপী জায়গাজমিজলাশয়হাটবাজারপরিবহনব্যবসা প্রতিষ্ঠানদোকানপাটফুটপাতবস্তি ইত্যাদির দখল ও পাল্টা দখলে চরম অস্থিরতা বিরাজ করেছে। পুরোনোদের সরিয়ে নতুন করে গড়ে তোলা হয়েছে দখলদারচাঁদাবাজি সিন্ডিকেট। পুলিশ প্রশাসন ও সরকারের শূন্যতার সুযোগে এক শ্রেণির দুর্বৃত্তদের বেপরোয়া দখলদারিত্বে দেশবাসী যারপরনাই আতঙ্কিতআশঙ্কিত। সরকারিবেসরকারিআধা সরকারিস্বায়ত্তশাসিত প্রায় সকল সংস্থাপ্রতিষ্ঠানে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে দখলদারি, চাঁদাবাজি বন্ধের আহ্বান জানানো হলেও, মাঠ পর্যায়ে তার প্রতিপলন তেমন পরিলক্ষিত নয়।

অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে চাঁদাদখলবাজির বিরুদ্ধে উচ্চারিত বক্তব্য সকলের গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিয়ে দ্রব্যমূল্যের দ্রুততম মূল্যহ্রাস জনগণের জীবনে প্রবল স্বস্তিদায়ক হবে। আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে দেশজুড়ে পরিপূর্ণ শৃঙ্খলার প্রত্যাশায় প্রহর গুনছে সাধারণ মানুষ। চিরতরে দখলচাঁদাবাজি নির্মূলে প্রায়োগিক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। বিরাজিত সকল অভিশপ্ত দুষ্টচক্র সংহার করে দেশ দখলচাঁদাবাজ মুক্ত হোক, এটিই সময়ের উচ্ছসিত দাবি।

লেখক : শিক্ষাবিদ, সাবেক উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার এখনই সময়- প্রেক্ষিত উপাচার্য নিয়োগ
পরবর্তী নিবন্ধঅন্তর্বর্তী সরকার চাইলে সব ধরনের সহযোগিতা : জিএম কাদের