বান্দরবানের চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে পাহাড়িদের ভূমি দখল করে পাঁচ তারকা হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধের দাবিতে ঐতিহ্যবাহী বাঁশির সুরে লংমার্চ করেছে ম্রো জনগোষ্ঠী। পরে তারা স্থানীয় রাজবাড়ি মাঠে ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশও করেছে। গতকাল রোববার সকালে চিম্বুকের এলাকাবাসীর ব্যানারে বান্দরবানের থানচি সড়কের রামড়িপাড়া থেকে বান্দরবান শহর অভিমুখে উক্ত লংমার্চ করে প্রায় ত্রিশ কিলোমিটার হেঁটে। লংমার্চ শেষ হয় স্থানীয় রাজবাড়ি মাঠে। এতে ঐতিহ্যবাহী ম্রো বাঁশের বাঁশি বাজিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদ জানানো হয়। লংমার্চে ম্রো জনগোষ্ঠীর সহস্রাধিক নারী-পুরুষ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশগ্রহণ করে। চিম্বুক পাহাড় ছাড়াও আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা ম্রো জনগোষ্ঠীও এতে অংশ নেয়। এরপর রাজবাড়ি মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চিম্বুকবাসীর অন্যতম নেতা রেংচং ম্রো। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চিংপা ম্রো। এতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বান্দরবান বন ও ভূমি রক্ষা পরিষদের সভাপতি জুমলিয়ান আমলাই। দাবিগুলো হচ্ছে- চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে ভূমি দখল করে পাঁচ তারকা হোটেল, বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাতিল। প্রতিবাদকারীদের হয়রানি ও হুমকি প্রদান বন্ধ। চিম্বুকের ম্রোদের ভোগদখলীয় জায়গায় বিনোদন কেন্দ্র স্থাপন থেকে বিরত থাকা। স্থানীয় মানুষের ভূমি দখল করে নীলগিরি পর্যটন কেন্দ্র সম্প্রসারণ বন্ধ। চিম্বুক পাহাড়ের ভূমি ব্যবহারে স্থানীয় কার্বারী, হেডম্যান, জনপ্রতিনিধি ও পাড়াবাসীর মতামত নেয়া।
প্রসঙ্গত, বান্দরবানের চিম্বুকের চন্দ্র পাহাড়ে সিকদার গ্রুপের তত্ত্ব্বাবধানে একটি পাঁচ তারকা রিসোর্ট ও বিনোদন কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। ম্রো জনগোষ্ঠীর অভিযোগ, তাদের ভোগদখলীয় ভূমি দখল করে এটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে বেশ কয়েকটি ম্রো পাড়া উচ্ছেদ হওয়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন তাঁরা। তবে সিকদার গ্রুপ ও পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ম্রো জনগোষ্ঠীর ভূমি দখলের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।