বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানি পিছিয়েছে। আগামী ২ জানুয়ারি এ বিষয়ে শুনানি হবে। তার পক্ষে কোনো আইনজীবী না থাকায় রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম নতুন এ দিন ধার্য করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় দাশের জামিন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল গতকাল। কিন্তু শুনানিতে তার পক্ষের কোনো আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না; যার কারণে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত তা মঞ্জুর করে আগামী ২ জানুয়ারি পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন। তার পক্ষের কোনো আইনজীবী কেন আদালতে দাঁড়াননি–এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চিন্ময় দাশের জামিন নামঞ্জুরের পর একজন আইনজীবী মার্ডার হয়েছে। এজন্য হয়তো কোনো আইনজীবী তার জামিন শুনানিতে দাঁড়াননি।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন আজাদীকে বলেন, চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন শুনানি হওয়ার কথা ছিল আজকে (গতকাল)। কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করলে বিচারক আগামী ২ জানুয়ারি জন্য দিন ধার্য করেন।
চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের জামিন শুনানির দিন ধার্য থাকায় গতকাল সকাল থেকে আদালত পাড়ায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে চিন্ময় দাশকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়নি।
এদিকে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে গতকাল আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ করেন আইনজীবীরা। সহকর্মী আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যা মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানানো হয়।
জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে গত ২৬ নভেম্বর বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম। এরপর পুলিশ তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের চারপাশ শুয়ে বসে বিক্ষোভ করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এক পর্যায়ে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ।
পুলিশ জানায়, এসব ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি ও তার ভাই বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে আরেকটি করে মামলা দায়ের করেছেন। আলিফের ভাই খানে আলমের করা মামলায় ৭০ জন হিন্দু আইনজীবীকে আসামি করা হয়েছে বলে রোববার দেওয়া এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট।