চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুর

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ জানুয়ারি, ২০২৫ at ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ

নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। শুনানিতে চিন্ময় দাশের পক্ষে ১১ জন আইনজীবী বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

দীর্ঘ প্রায় ২০ মিনিটের সেই বক্তব্যে বলা হয়, ষড়যন্ত্রমূলকভাবে চিন্ময় দাশকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জড়ানো হয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ ‘নির্দোষ’। এ ১১ আইনজীবীর একজন হলেন অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য্য। আদালতের আদেশের পর তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পর জজ আদালতেও আমাদের মক্কেলের জামিন নামঞ্জুর হয়েছে। এখন আমরা উচ্চ আদালতে যাব। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মহানগর পিপি মফিজুল হক ভূইয়া দৈনিক আজাদীকে বলেন, চিন্ময় দাশের জামিন চেয়ে করা আবেদনের উপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে তার আইনজীবীরা জামিন চেয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন। আমরা রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করি। শুনানি শেষে বিচারক চিন্ময়ের জামিন নামঞ্জুরের আদেশ দেন। এদিকে চিন্ময় দাশের জামিন শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত পাড়ায় ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করে আইনশৃক্সখলা বাহিনী। আদালতের প্রবেশ পথের পাশাপাশি আদালত ভবন সর্বত্রই নজরদারি করা হয়। আদালত সংশ্লিষ্ট ও গণমাধ্যমের লোক ছাড়া আদালত ভবনে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। তবে শুনানিকে কেন্দ্র করে আদালত ভবন ও আদালত ভবন এলাকায় আইনজীবীদের জড়ো হতে দেখা গেছে। শুনানির আগে ও পরে চিন্ময় দাশের বিচার চেয়ে তারা নানা স্লোগান দেন।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, চিন্ময় যে মামলায় কারাগারে রয়েছেন সেটি রাষ্ট্রদ্রোহ ধারার মামলা। এ ধারার মামলা জামিন অযোগ্য। এ জন্য আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত যখন তার জামিন নামঞ্জুর করেছিলেন অর্থাৎ গত ২৬ নভেম্বর তার অনুসারীরা আদালত পাড়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছিল। আমাদের একজন ভাই আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেদিন পুলিশের একটি হ্যান্ড মাইক ব্যবহার করে প্রিজন ভ্যানে বসেই চিন্ময় বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি যদি বক্তব্য না রাখতেন তাহলে আদালতের ইতিহাসে ন্যাক্কারজনক এ ঘটনা ঘটতো না। আমরা সেদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া সব মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানাচ্ছি। তাকে হুকুমদাতা হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানাচ্ছি। এছাড়া এখন পর্যন্ত যেসব আসামি গ্রেপ্তার হয়নি তাদেরকেও দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের আবেদন জানাচ্ছি।

নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাটি দায়ের হয়েছিল গত ৩১ অক্টোবর। চান্দগাঁওয়ের মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এ মামলায় গত ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে চিন্ময় দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন নামঞ্জুরের পর চিন্ময় দাশের পক্ষে তার আইনজীবীরা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এ বিষয়ে ৩ ডিসেম্বর শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটি হয়নি। পরে আদালত ২ জানুয়ারি অর্থাৎ গতকাল বৃহস্পতিবারের জন্য দিন ধার্য করেছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে মোট ভোটার ৬৫ লাখ ৫৭ হাজার ২২৫ জন
পরবর্তী নিবন্ধতিন স্থানে বাস-ট্রাক চাপায় চার বাইক আরোহীর মৃত্যু