রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়া এলাকায় এক দন্ত চিকিৎসককে ছুরি মেরে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রোববার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে শেওড়াপাড়ায় মেট্রোরেল স্টেশনের কাছে এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আ স ম মাহাতাব উদ্দিন জানান। খবর বিডিনিউজের।
নিহত আহমেদ মাহী বুলবুল (৩৮) মগবাজারের ‘রংপুর ডেন্টাল’ নামের একটি চেম্বারে নিয়মিত রোগী দেখতেন। পাশাপাশি ঠিকাদারিতে যুক্ত ছিলেন। বুলবুলকে হত্যার জন্য পুলিশ ছিনতাইকারীদের দায়ী করলেও তার পরিবারের ধারণা ভিন্ন। বুলবুলের সঙ্গে থাকা ১২ হাজার টাকা এবং মোবাইল ফোন দুটোর কোনোটিই খোয়া যায়নি বলে অন্য সন্দেহ করছেন তার শ্বশুর ইয়াকুব আলী। তিনি বলেন, যদি টাকা আর মোবাইল দুইটাই সাথে থাকে, তাহলে এটা কীভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা হয়?
ঠিকাদারি কাজে নোয়াখালী যাওয়ার জন্য ভোরে বুলবুল বাসা থেকে বেরিয়েছিলেন বলে জানান তার শ্বশুর ইয়াকুব। ওই সময় তিনি ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন বলে ডিএমপির মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মাহতাব উদ্দীন দাবি করছেন। তিনি বলেন, আমরা যতদূর জানি, তিনজন ছিনতাইকারী ছিল। এরা এই ঘটনাটা ঘটিয়েছে। পথশিশুদের জন্য কাজ করতেন ডা. আহমেদ মাহী বুলবুল, স্বেচ্ছাসেবী আরও সংগঠনেও যুক্ত ছিলেন। কিন্তু তিনি যখন আক্রান্ত হলেন, জখম হলেন, তখন কাছের হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক হয়েও প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও তিনি পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বুলবুলকে কাছের আল হেলাল হাসপাতালে নিয়েছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু বেসরকারি এই হাসপাতালে তাকে কোনো চিকিৎসা না দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে দেখে মৃত ঘোষণা করেন। আল হেলাল হাসপাতাল কর্মকর্তারা অবশ্য দাবি করছেন, বুলবুলকে তাদের হাসপাতালে নেওয়াই হয়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ভিন্ন কথা।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল মর্গে বন্ধুর লাশের অপেক্ষায় থাকা মোহাম্মদ সিরাজও বলেন, প্রথমে সেই (আল হেলাল) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তারা পুলিশ কেস বুঝতে পেরে বুলবুলকে হাসপাতালেই ঢুকতে দেয়নি। তারা চিকিৎসা না দিয়ে ৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশকে খবর দেয়। এখানেও কিছু সময়ক্ষেপণ হয়েছে, যার কারণে অতিরিক্ত রক্তপাতেই তিনি মারা গেছেন। পুলিশের ভাষ্য, এই চিকিৎসকের ডান পায়ের উরুতে একটি আঘাতই করা হয়েছিল। উরুর সেই জখম থেকে অনেক রক্ত পড়ছিল।