অন্তিম মুহূর্তে সংকটাপন্ন রোগীদের ভরসাস্থল নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)। যেখানে অত্যাধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা না পেয়ে চোখের সামনে অনেক রোগী মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে অত্যাধিক খরচের কারণে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র রোগীরা সেখানে চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাই তাদের একমাত্র ভরসা চমেক হাসপাতালের আইসিইউ। বর্তমানে হাসপাতালের নিচ তলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় নির্মিত ৩০ শয্যার আইসিইউ ইউনিটে রোগী ভর্তি হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে–হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পুরনো আইসিইউর ৩০ শয্যা চালু হবে আগামী মাসের মাঝামাঝিতে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চমেক হাসপাতালের ৩০ শয্যার বাইরে নগরীর মা ও শিশু হাসপাতাল, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম ডায়বেটিক জেনারেল হাসপাতাল ও বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালে শতাধিক আইসিইউ শয্যা রয়েছে। তারমধ্যে একমাত্র চমেক হাসপাতালে মিলছে ১৫ টাকার টিকেটে লাখ টাকার সেবা। তাই মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে সরকারি হাসপাতালের একটি আইসিইউ শয্যা যেন ‘সোনার হরিণ’।
চিকিৎসকরা জানান, সড়ক দুর্ঘটনা কিংবা মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউ সাপোর্ট দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আইসিইউ শয্যার সংকটের কারণে ওইসব রোগীদের সঠিক সময়ে অস্ত্রোপাচারও করা সম্ভব হতো না। দুর্র্ঘটনার রোগী ছাড়াও নিউরোসার্জারি, গাইনোকোলোজি, কার্ডিওলজি, কার্ডিয়াক সার্জারি, নেফ্রোলজি, মেডিসিন বিভাগ থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্রিটিকাল রোগীকে আইসিইউতে রেফার করেন চিকিৎসকরা। এখন আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধি হওয়ায় সংকট কিছুটা হলেও ঘুচবে। চমেক হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নেন, তাদের বেশিরভাগই দরিদ্র ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর। এদের পক্ষে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইসিইউর জন্য হাহাকার করতে করতে রোগী মারা যান।
চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দিন আজাদীকে বলেন, হাসপাতালের চতুর্থ তলায় পুরনো আইসিইউ ইউনিটে শয্যা বাড়ানোর কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। এই ইউনিটে আগে ২০টি শয্যা ছিল। এখন আরো ১০ শয্যা বৃদ্ধি করে ৩০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। ফলে গত বছরের অক্টোবর থেকে পুরনো ইউনিটটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝিতে ইউনিটটিতে রোগী ভর্তি শুরু হবে। তখন মোট আইসিইউ শয্যা হবে ৬০টি। এছাড়া ইতোমধ্যে নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডে ১০ শয্যার ডেডিকেটেড আইসিইউ চালু হয়েছে। আশা করছি আইসিইউ সংকট কিছুটা হলেও ঘুচবে এবার।