দেশে নতুন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চার মাসে সর্বনিম্ন। ২৪ ঘণ্টায় এর আগে সবচেয়ে কম মৃত্যু হয়েছিল গত ২৮ মে। সেদিন ১৫ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারপর থেকে মৃত্যু সংখ্যার গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে গত ৩০ জুন ৬৪ জনে পৌঁছেছিল। দেশে এক দিনে মৃত্যুর সেটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা।
প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ৩০ জুনের পর বেশ কিছু দিন দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ৩০ জনের বেশি ছিল। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তা কমে ৩০ জনের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছে। তবে মাঝে মাঝে মৃত্যুর সংখ্যা ২০-২১ জনেও নেমে আসছে। কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজে প্রধানমন্ত্রীর সন্তোষ প্রকাশের দিন চার মাসে সর্বনিম্ন মৃত্যুর খবর এল। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল শনিবার বিকালে সংবাদ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য জানানো হয়। তাতে বলা হয়, শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় আরও ২০ জনের মৃত্যু হওয়ায় দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৫ হাজর ৩২৫ জনে দাঁড়িয়েছে।
মৃতের সংখ্যায় বিশ্বে ২৯তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের উপরে থাকা ফিলিপিন্সে ৫ হাজার ৬৭৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে। মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বাধিক ২ লাখ ১৩ হাজার ৫৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার পরের অবস্থানে ব্রাজিল (১ লাখ ৪৫ হাজার ৪৩১)। তৃতীয় স্থানে থাকা ভারতে মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৮৭৫ জন।
আক্রান্তের সংখ্যায় বৈশ্বিক তালিকায় অনেক সামনে রয়েছে বাংলাদেশ। এখানে বাংলাদেশের অবস্থান ষোড়শ। বাংলাদেশের সামনে রয়েছে ইরাক ও ইরান। আক্রান্তের সংখ্যায়ও বিশ্বে শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। তার পরের অবস্থানেই ভারত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর গতকাল দেশে ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১৮২ জন নতুন রোগী শনাক্ত করেছে। তা নিয়ে দেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৫৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে। অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১ হাজার ৪৪২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ২ লাখ ৮০ হাজার ৬৯ জন হয়েছে। বিশ্বে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৩ কোটি ৪৬ লাখ পেরিয়েছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১০ লাখ ২৯ হাজার।
বাংলাদেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে ৮ মার্চ। আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিন লাখ পেরিয়ে যায় ২১ সেপ্টেম্বর। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১০৯টি ল্যাবে ৯ হাজার ৫৫৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ১৯ লাখ ৭৯ হাজার ৮০৫টি নমুনা।
২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৭৬ দশমিক ২০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ১৭ জন, নারী ৩ জন। এরা প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ১০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। ৬ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল। মৃতদের ১২ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ জন রংপুর বিভাগের, ১ জন সিলেট বিভাগের এবং ১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।