চার বছরে বসেছে কেবল পিলার ও প্রতিরক্ষা দেয়াল

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১৯ মে, ২০২৩ at ৭:৩৪ পূর্বাহ্ণ

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় ধলিয়া খালের উপর নির্মাণধীন সেতুর কাজ চার বছরেও শেষ হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে তপ্ত মাস্টার পাড়া, দয়া হেডম্যান পাড়া, কুলপাড়া, বীরেন্দ্র কার্বারি পাড়া, কাঁঠাল পাড়া, চন্দ্রপূর্ণ পাড়াসহ অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ। সেতুর কাজ শেষ না হওয়ার জন্য জেলা পরিষদ ও ঠিকাদারদের গাফিলতিকে দায়ী করেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষ।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৮ সালে পাহাড়ি ঢলে ধলিয়া খালের উপর থাকা প্রায় ৯০ ফুট দীর্ঘ সেতু ভেঙে যায়। পরবর্তী বছর ২০১৯২০ অর্থ বছরে সেতুটি নির্মাণের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয় জেলা পরিষদ। এরপর চার বছর পেরিয়ে গেলেও সেতুর ৪০ শতাংশও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার। এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় গ্রামবাসী দীপেন্দ্র ত্রিপুরা জানান, আমরা গ্রাম থেকে কলাসহ বিভিন্ন মালামাল পরিবহন করি। কিন্তু সেতু না থাকায় আমাদের যাতায়াতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। এখানে চার বছর ধরে সেতুর কাজ চলতেছে কিন্তু কাজ শেষ হয়নি। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জরেন বিকাশ ত্রিপুরা জানান, অনেক দূরদূরান্ত থেকে আমরা কৃষিজ পণ্য নিয়ে আসি। আগে সরাসরি ব্রিজ দিয়ে মালামাল পরিবহন করতাম এখন সেতু না থাকায় আমাদের কষ্ট হচ্ছে। সেতুর নির্মাণ কাজ অনেক দিন ধরে বন্ধ।

স্থানীয় ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য মোহিনী ত্রিপুরা বলেন, হাজার হাজার মানুষ কষ্ট পাচ্ছে। মালামাল পরিবহন ও মানুষের যাতায়াতের বিঘ্ন ঘটছে। মানুষের ভোগান্তির পাশাপাশি পরিবহনও খরচও বেড়ে গেছে। স্কুলের শিক্ষার্থী, নারী ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে।

মাটিরাঙা সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য অমৃত ত্রিপুরা বলেন, ২০১৯২০ অর্থ বছরে ব্রিজের কাজ শুরু হয়। এরপর আর কোনো খোঁজখবর নেই। আমরা বারবার জেলা পরিষদকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ব্রিজের কাজ শেষ না হওয়ার জন্য ঠিকাদারকে দায়ী করেছে জেলা পরিষদ। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯২০ অর্থ বছরে ধলিয়া খালের উপরে তপ্ত মাস্টার পাড়া ১০ নম্বর এলাকার সংযোগস্থলে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩০ ফুট দীর্ঘ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্নিমেষ ট্রের্ডাস কাজ পায়। এরমধ্যে খালের উপর কেবল পিলার ও প্রতিরক্ষা দেওয়াল নির্মাণ করেছে। এরপর এক বছর ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার নির্নিমেষ দেওয়ান জানান, সেতুর নির্মাণের কাজ আমার প্রতিষ্ঠান পেলেও আমি এটির কাজ করছি না। অন্য দুই ব্যক্তি করছে এর নির্মাণ কাজ। আমি এই বিষয়ে আর বিশেষ কিছু বলতে পারব না।

খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের সহকারী প্রকৌশলী প্রশান্ত কুমার হাওলাদার বলেন, ইতোমধ্যে ঠিকাদারকে কাজ শেষ করার জন্য চিঠি দিয়েছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমামলা দায়েরের এক সপ্তাহ আগে বাবুলের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পান মিতুর বাবা
পরবর্তী নিবন্ধকিশোরী উদ্ধার, টিকটক প্রতারক গ্রুপের তিনজন গ্রেপ্তার