চার ধাপ করে পিছিয়েছে চসিক ও ওয়াসা

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির মূল্যায়ন

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৬ নভেম্বর, ২০২২ at ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ

বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির মূল্যায়নে চার ধাপ করে পিছিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও চট্টগ্রাম ওয়াসা। ২০২১-২২ অর্থবছরে চুক্তিবদ্ধ স্থানীয় সরকার বিভাগের ২০টি প্রতিষ্ঠানের ফলাফলে চসিকের অবস্থান ১৮তম। তালিকায় ওয়াসার অবস্থান ৮ম। পূর্বের অর্থবছরে চসিক ১৪তম এবং ওয়াসা ছিল চতুর্থ। ওই হিসেবে চট্টগ্রামের জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান দুটি চার ধাপ করে পিছিয়েছে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এক বছরের কর্মপরিকল্পনা ও সম্ভাব্য অর্জন উল্লেখ করে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ২০২১ সালের ২৭ জুন স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করে চসিক ও চট্টগ্রাম ওয়াসাসহ ২০টি প্রতিষ্ঠান। নিয়ম অনুযায়ী, সম্ভাব্য অর্জনগুলোর বাস্তবায়ন অগ্রগতির রিপোর্ট প্রতিমাসে স্থানীয় সরকার বিভাগে পাঠাতে হয়। অর্থবছর শেষে চুক্তিতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহের বিপরীতে প্রকৃত অর্জন ১০০ নম্বরে মূল্যায়ন করা হয়। গত মাসে ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে চসিকের প্রাপ্ত স্কোর ৮২ দশমিক ৬৯ এবং ওয়াসার প্রাপ্ত স্কোর ৯৫ দশমিক ৫০। এছাড়া ৯৯ দশমিক ১৮ পেয়ে প্রথম হয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এবং ৬৫ দশমিক ২৩ পেয়ে ২০তম হয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন। চসিক কৌশলগত উদ্দেশ্যের ৭০ নম্বরের মধ্যে ৬২ দশমিক ৩৮, শুদ্ধাচার কর্মপরিকল্পনায় ১০ নম্বরের মধ্যে ৬ দশমিক ৩৩, ই-গভর্ন্যান্স ও উদ্ভাবন কর্মপরিকল্পনায় ১০ নম্বরের মধ্যে ৮ দশমিক ২০, জিআরএস কর্মপরিকল্পনায় ৪ নম্বরের মধ্যে ২ দশমিক ৯৬, সেবাপ্রদান প্রতিশ্রুত কর্মপরিকল্পনায় ৩ নম্বরের মধ্যে শূন্য দশমিক ৯০ এবং তথ্য অধিকার কর্মপরিকল্পনায় ৩ নম্বরের মধ্যে ১ দশমিক ৯২ পেয়েছে। ওয়াসা কৌশলগত উদ্দেশ্যের ৬৮ দশমিক ৫৯, শুদ্ধাচার কর্মপরিকল্পনায় ৮ দশমিক ৩৮, ই-গভর্ন্যান্স ও উদ্ভাবন কর্মপরিকল্পনায় ৮ দশমিক ৭২ জিআরএস কর্মপরিকল্পনায় ৪, সেবাপ্রদান প্রতিশ্রুত কর্মপরিকল্পনায় ২ দশমিক ৯২ এবং তথ্য অধিকার কর্মপরিকল্পনায় ৩ নম্বরের মধ্যে ২ দশমিক ৮৯ পেয়েছে।

সরকারি কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারি কর্মসম্পাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি প্রবর্তন করে সরকার। ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে প্রবর্তন করা এ চুক্তির অন্যতম উদ্দেশ্য ফলাফলধর্মী কর্মকাণ্ডে উৎসাহ প্রদান এবং কর্মকৃতি বা পারফরমেন্স মূল্যায়ন। চুক্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলো পুরো এক বছরের কর্মপরিকল্পনা ও সম্ভাব্য অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা উপস্থাপন করে।
জানা যায়, চুক্তিতে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে চসিকের সম্ভাব্য প্রধান অর্জন ধরা হয়, ৯৩ শতাংশ বর্জ্য পরিকল্পিতভাবে সংগ্রহ করা, ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ ও উন্নয়ন, ১১৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার বা মেরামত, ১০০ কিলোমিটার সড়ক বাতি স্থাপন, ৪৪০ কিলোমিটার সড়ক বাতি সংস্কার বা মেরামত, ২৫ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ বা উন্নয়ন, ৬৪ কিলোমিটার ড্রেন সংস্কার, সাড়ে ১৬ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ, ৪৩ কিলোমিটার ফুটপাত সংস্কার বা মেরামত।

একইভাবে ২০২১-২২ অর্থ বছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার সম্ভাব্য প্রধান অর্জনের উল্লেখযোগ্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় পানি সরবরাহ ৪৫০ এমএলডি থেকে বৃদ্ধি করে ৪৯০ এমএলডি করা। ৭৫ কিলোমিটার নতুন পাইপ লাইন স্থাপন, ৩৭ হাজার নতুন গ্রাহক সংযোগ করা, দুই হাজার ত্রুটিপূর্ণ পানির মিটার পরিবর্তন করা এবং পানি সরবরাহ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে স্বয়ংক্রিয় করা।

ফলাফলে পিছিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম ছাড়া গত বছর অন্যান্য উন্নয়ন কাজ হয়নি। সামনে প্রচুর উন্নয়ন কাজ হবে। সেভাবে পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি আমরা। তাই আশা করছি, আগামীবার এপিএ মূল্যায়নে আমরা এগিয়ে যাব এবং প্রথম পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই অবস্থান হবে আমাদের।

চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ দৈনিক আজাদীকে বলেন, আমরা প্রচুর কাজ করেছি। কিন্তু রিপের্াটিং যথাযথভাবে করতে না পারায় অল্প পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছি। গতবার যেহেতু চতুর্থ ছিলাম তাই এবার তিন এর মধ্যে থাকব আশা করেছিলাম। অন্তত পূর্বের অবস্থান ধরে রাখব ভেবেছিলাম। কিন্তু ভাগ্য খারাপ। রিপোর্টিংয়ের কারণে পিছিয়ে গেলাম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রাইভেট কার আটকে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ
পরবর্তী নিবন্ধশেষ হলো ৪৮৩ দিনের আন্দোলন