বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে রেকর্ড মৃত্যুর পরদিন আরও ১৮৫ জনের মৃত্যুর খবর এল। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৭৭২ রোগী। এক দিনে মৃত্যু ও শনাক্তের এই সংখ্যা আগের দিনের চেয়ে কম। শুক্রবার ১১ হাজার ৩২৪ জন রোগী শনাক্ত এবং ২১২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছিল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত ৮ হাজার ৭৭২ জনকে নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১০ লাখ ৯ হাজার ৩১৫ জন। আরও ১৮৫ জনের মৃত্যুতে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬ হাজার ১৮৯ জন। সরকারি হিসাবে আক্রান্তদের মধ্যে এক দিনে ৫ হাজার ৭৫৫ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাদের নিয়ে মোট সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৬৮ হাজার ১৩৯ জন।
কোভিড-১৯ মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ার মধ্যে চার দিন পর দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০ হাজারের নিচে নামল। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, দেশে এই মুহূর্তে সক্রিয় কোভিড রোগী রয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার। অর্থাৎ শনাক্ত রোগীদের মধ্যে এ সংখ্যক এখন সংক্রমণ নিয়ে রয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
দেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ। ৯ জুলাই তা ১০ লাখ ছাড়িয়ে যায়। ৮ জুলাই রেকর্ড ১১ হাজার ৬৫১ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ে। মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দৈনিক শনাক্ত টানা চার দিন ১০ হাজারের উপরে ছিল। গতকাল তা ১০ হাজারের নিচে নামলেও নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার বেশিই (৩১ শতাংশ ৪৬ শতাংশ) ছিল। এই ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা কমে দাঁড়ায় ২৭ হাজার ৮৮৪।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে ঢাকা বিভাগে ৪ হাজার ৪৯২ জন। ঢাকার পরেই বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে, ১ হাজার ৬৯২ জন। এছাড়া খুলনা বিভাগে ৭৭২ জন, রাজশাহী বিভাগে ৬২০, ময়মনসিংহ বিভাগে ২৪০, রংপুর বিভাগে ২৭৮, সিলেট বিভাগে ৩৯৪ এবং বরিশাল বিভাগে ২৮৪ জন রোগী শনাক্ত হয়। জেলার হিসাবে ঢাকার (৩৩৯৬) পর বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে চট্টগ্রামে (৬০২)।
গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে ঢাকা বিভাগে ৭০ জন। জেলার হিসাবেও মৃত্যু বেশি ঢাকায় ৩১ জন। ঢাকার পরেই সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে ৫১ জন। এর মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যুই হয়েছে কুষ্টিয়া জেলায়। খুলনায় মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ১৮৫ জনের মৃত্যু ঘটেছে তাদের প্রায় অর্ধেক ৯২ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ৫১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ২২ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ১৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, বাকিদের বয়স এর নিচে।
মৃতদের ১৮৫ জনের মধ্যে ১২১ জন পুরুষ, ৬৪ জন নারী। তাদের ১৪৪ জন সরকারি হাসপাতালে, ২৮ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং ১২ জন বাসায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান এবং ১ জনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়।