ঘূর্ণিঝড় মোখা কবলিত সেন্টমার্টিনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত এই এলাকায় সরকারি–বেসরকারি উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণের পাশাপাশি চলছে তালিকা যাচাই–বাছাই করে চার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত ঘর–বাড়ি নির্মাণ, পূর্ণ নির্মাণ ও মেরামত করার কাজ। ইতিমধ্যে ২শ পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও নগদ ৬ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ঢেউটিন ও নগদ অর্থ সহায়তা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম।
তিনি জানান, এখানে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করার পাশাপাশি বিধ্বস্ত বাড়ি–ঘর নির্মাণ করে পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হয়েছে। চারটি ক্যাটাগরি অনুযায়ী ‘এ’ ক্যাটাগরির ক্ষতিগ্রস্ত ২শ পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউটিন ও ৬ হাজার নগদ অর্থ হিসেবে মোট ৪শ বান্ডিল টিন ও ১২ লাখ নগদ অর্থ প্রদান, ‘বি’ ক্যাটাগরির ২শ পরিবারকে নতুন গৃহ নির্মাণ, ‘সি’ ক্যাটাগরির ক্ষতিগ্রস্ত ৫শ পরিবারকে ১১ হাজার টাকা করে ৫৫ লাখ টাকা এবং ‘ডি’ ক্যাটাগরির ১ হাজার পরিবারকে ৫ হাজার টাকা করে ৫০ লাখ টাকা সহায়তা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যা ইতিমধ্যে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যাতে যথাযথ সহায়তা পায় সেই লক্ষ্যে সেন্টমার্টিনে ডোর টু ডোর প্রক্রিয়ায় উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান–মেম্বারদের সমন্বয়ে তালিকা যাচাই–বাছাই করে পুনর্বাসন কাজ চলছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, সেন্টমার্টিনে ক্ষতিগ্রস্ত একটি পরিবারও যাতে বলতে না পারে সরকারি সহায়তা পায়নি। সেভাবেই কাজ চলছে। এতে দ্বীপের জনসাধারণ সাহস সঞ্চয় করতে পেরেছেন।
শাহপরীর দ্বীপে বিভাগীয় কমিশনার : চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. আমিনুর রহমান টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। গতকাল বিকেলে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে কথা বলেন এবং ৮টি পরিবারকে ২ বান্ডিল ঢেউ টিন ও ৬ হাজার টাকা করে প্রদান করেন। এ সময় কঙবাজার জেলা প্রশাসক মো. শাহীন ইমরান, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
২শ পরিবারকে ত্রাণ দিয়েছে কোস্ট গার্ড : গতকাল শুক্রবার দুপুরে সেন্টমার্টিন বিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের জাহাজ বিসিজিএস কামরুজ্জামান ঘূর্ণিদুর্গত সেন্টমার্টিনে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করেছে। জাহাজটির অধিনায়ক কমান্ডার মাহবুবুল হাসান উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত ২শ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। এ সময় তিনি বলেন, উপকূল সুরক্ষার পাশাপাশি কোস্ট গার্ড সবসময় দুর্গত মানুষের পাশে সাহায্যে এগিয়ে আসে।
১৮০ পরিবারকে ব্যবসায়ীর আর্থিক সহায়তা : সেন্টমার্টিন দক্ষিণ পাড়া এলাকায় পরিবার প্রতি আড়াই হাজার টাকা করে ১৮০টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সহায়তা প্রদান করেছেন জাবেদ রহমান নামে এক ব্যবসায়ী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তার পক্ষে নগদ অর্থ তুলে দেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান। এসময় তিনি বলেন, এই দুর্যোগকালীন বিত্তবানদের উচিত অসহায়দের পাশে এসে দাঁড়ানো।












