চাম্বলে পাহাড় কাটা বন্ধে পরিবেশের অভিযানে বাধা

জব্দ স্কেভেটর অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের জিম্মায়

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১২ অক্টোবর, ২০২০ at ৪:৪৩ পূর্বাহ্ণ

বাঁশখালীর চাম্বলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে চলছে সরকারি পাহাড় নিধন। প্রায় এক বছর ধরে পাহাড় কাটা চললেও খবর পেয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান চালিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল (রবিবার) সকালে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে মাটি ভর্তি একটি ডাম্প ট্রাক ও একটি স্কেভেটর জব্দ করা হয়। অভিযানের সময় চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের লোকজন পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে বাধা সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় ঘটনাস্থলে জব্দকৃত স্কেভেটরের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় মাটি কাটার সাথে জড়িতরা। পরে স্কেভেটর ও ডাম্প ট্রাক ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর জিম্মায় দিয়ে আসেন পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বাঁশখালী উপজেলার পূর্ব চাম্বল ফরেস্ট অফিসের দক্ষিণ চুড়ামুড়া সংলগ্ন স্থানে পাহাড় কাটা হয়েছে নির্বিচারে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী এসব পাহাড় কেটেছেন। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ পাওয়ার পর রোববার অভিযান চালিয়ে হাতেনাতে ডাম্প ট্রাক ও স্কেভেটর জব্দ করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আফজালুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘বাঁশখালীর চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী তার নিজের এলাকায় একটি পাহাড় কেটে সাবাড় করছেন। প্রায় এক বছর ধরে স্কেভেটর, ড্রাম্প ট্রাক ব্যবহার করে পাহাড় কেটেছেন। ইতিমধ্যে ৩৫০ ফুট লম্বা, ১০০ ফুট চওড়া এবং ৪০ ফুট উচ্চতার একটি পাহাড় কেটে স্থানীয় একটি আদর্শগ্রাম আশ্রয়ন প্রকল্পে কিছু মাটি ব্যবহার করে অন্যমাটিগুলো বিক্রি করে দিয়েছেন। সবমিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ ঘনফুট মাটি কাটা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়ে আমরা রোববার সকালে অভিযান পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে মাটিভর্তি একটি ডাম্পট্রাক ও একটি স্কেভেটর জব্দ করেছি। জব্দ ট্রাক ও স্কেভেটর দুইটি ইউনিয়ন পরিষদের জিম্মায় দিয়ে এসেছি। অভিযানের সময় পাহাড় কাটার সাথে জড়িতরা স্কেভেটরটির যান্ত্রিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন। যে কারণে আমরা স্কেভেটরটি না এনে পাহাড় কাটায় অভিযুক্ত হলেও জনপ্রতিনিধি হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের জিম্মায় দিয়েছি।’
অভিযানের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অভিযান শেষ করেছি। অভিযানের বিষয়ে সোমবার পরিচালককে লিখিত রিপোর্ট দেবো। এরপর ওনাকে (ইউপি চেয়ারম্যান) নোটিশ করা হবে।’
এ ব্যাপারে চাম্বল ইউপির চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী মুঠোফোনে দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘আমি কোনো পাহাড় কাটিনি। পাহাড় কাটার যে অভিযোগ করা হচ্ছে, সেটাও ভিত্তিহীন। বৃষ্টিতে পাহাড় ধস হওয়ার পর আমি পরিষ্কার করেছি মাত্র।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘কিশোর গ্যাং’ এর সেই দুই সদস্য আবার গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধনগরীর চার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হবে চার লেন