চট্টগ্রাম–৮ চান্দগাঁও–বোয়ালখালী আসনের চান্দগাঁও থানাধীন কয়েকটি এলাকায় পুলিশ ও বিজিবির সাথে বিএনপি–জামায়াতের কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় আশেপাশের সাড়ে ৪ কিলোমিটার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার পর বিএনপি–জামায়াতের ১০ জন কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এর আগে গতকাল সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে ভোটারদের আসতে বাধা দেয় এবং সড়কে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে বিএনপি–জামায়াতের কর্মীরা। এ সময় পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে চাইলে তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের সাথে যোগ দেয় র্যাব।
দুপুর ১২টার দিকে মৌলভী পুকুরপাড় এলাকার আল–হিকমাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কেন্দ্রের প্রধান গেট ভেঙে শতাধিক লোক প্রবেশ কেন্দ্রে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় বন্ধ হয়ে যায় ভোটগ্রহণ। পরে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরও থেমে থেমে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বিক্ষোভকারীরা। সরেজমিনে দেখা যায়, চান্দগাঁওয়ের টেকবাজার পোল হাজী কালামিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আল হিকমাহ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, হাজেরা–তজু ডিগ্রি কলেজ ভোটকেন্দ্র এলাকার বিভিন্ন সড়কে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এছাড়া সড়কে গুলির খোসা ও প্রচুর ইটের টুকরা পড়ে থাকতে দেখা যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুরাতন চান্দগাঁও থানা, পটানিয়া গোদা, মৌলভী পুকুরপাড় এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোর আশেপাশে সকাল ৮টা থেকে কিছু সময় পরপর ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। এ সময় আশেপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ১০টার দিকে পুরাতন চান্দগাঁও থানা এলাকার হাজেরা–তজু বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রের সামনে ‘অবৈধ নির্বাচন মানি না মানব না’, ‘জিয়ার সৈনিক এক হও লড়াই কর’ স্লোগান দিয়ে আশেপাশে তাণ্ডব চালায়। এছাড়া তারা পুলিশ–র্যাবের গাড়ি ভাঙচুর করে। এ সময় ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছোড়ে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্থান ত্যাগ করলে তারা আবারও বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে আতঙ্ক ছড়ায়। এক পর্যায়ে পুলিশ–বিজিবি ও র্যাবের সাথে যুক্ত হয় সেনাবাহিনীর টহল টিম। এছাড়া ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায় বিজিবির সাঁজোয়া যান।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল কবির আজাদীকে বলেন, বিএনপি–জামায়াতের কর্মীরা ভোটগ্রহণ শুরুর পর থেকে আতঙ্ক ছড়িয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা প্রদান করে। আমরা খেয়াল করলাম, চান্দগাঁও থানার সামনে শরাফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্পের সামনে থেকে কিছুক্ষণ পরপর লোকজন সংগঠিত হচ্ছিল। আমাদের ধারণা, ওই পেট্রোল পাম্পের কেউ এসব নাশকতার সাথে যুক্ত আছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। নাশকতার সাথে জড়িত থাকার দায়ে ইতোমধ্যে ১০ জনকে আটক করেছি। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।












