চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে নৌপথে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে স্থবিরতা কাটতে শুরু করেছে। দীর্ঘ সময় ধরে চাক্তাই খালের কর্ণফুলীর মোহনায় স্লুইচ গেট নির্মাণের কারণে খাল দিয়ে নৌ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি স্লুইচ গেটের সামনে দেয়া বাঁধের এক পাশ কেটে দেয়ায় জোয়ারের সময় ছোট নৌকাগুলো গেটের নিচ দিয়ে প্রবেশ করতে পারছে। এতে করে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব হচ্ছে বলে জানা গেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ থেকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী এবং চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় নৌপথে পণ্য পরিবহন হয়। কিন্তু চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় বাঁধ দিয়ে স্লুইচ গেট নির্মাণ করার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে নৌকা প্রবেশ করতে পারছিল না। তাই ব্যবসায়ীদের বাধ্য হয়ে পণ্য পরিবহন করার জন্য গাড়ি ভাড়া করে কর্ণফুলীর মোহনায় নিয়ে পণ্য ওঠানামা করতে হয়েছে। এখন ছোট নৌকাগুলো প্রবেশ করতে পারায় ব্যবসায়ীদের পরিবহন খরচ বাঁচবে। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) স্লুইচ গেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। প্রকল্পের শুরুর দিকে কাজের গতি কিছুটা শ্লথ ছিল। তবে সম্প্রতি কাজের গতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। বর্তমানে নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত হয়ে চাক্তাই খাল ‘চীনের দুঃখ হোয়াংহো’ নদীর মতো ব্যবসায়ীদের দুঃখে পরিণত হয়েছে। গত দুই দশকে চাক্তাই খালের দুই পাড়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ, পলি জমে খাল ভরাট হয়ে যাওয়া এবং তলা পাকা করার কারণে স্থায়ীভাবে নাব্যতা হারায় খালটি। এছাড়া কর্ণফুলী নদীতে কার্যকর ড্রেজিং না হওয়ার কারণে পানির ধারণক্ষমতা কমে গেছে। ফলে বৃষ্টি ছাড়াই জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছিল ব্যবসায়ীদের দোকান ও গুদাম। শেষ পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে চাক্তাই খাল ও রাজাখালী খালে জোয়ারের পানি প্রতিরোধক স্লইচ গেট নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আহসান খালেদ পারভেজ বলেন, স্লু্ইচ গেটের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা নৌ বাণিজ্যের সুফল পাব না। তবে এখন জোয়ারের সময় কেবল ছোট ছোট কিছু নৌকা পণ্য পরিবহন করতে পারছে। এটিও স্বস্তিদায়ক।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন আজাদীকে বলেন, সঠিক সময়ে স্লুইচ গেটের কাজ শুরু হলে আমরা এতদিনে স্লুইচ গেটের সুফল ভোগ করতে পারতাম। কিন্তুু কাজের ধীরগতির কারণে অনেক ভুগতে হয়েছে। বিশেষ করে নৌপথে পণ্য পরিবহনে ধস নামে। এখন স্লুইচ গেটের এক পাশ খুলে দেয়ার কারণে ছোট নৌকায় পণ্য পরিবহন করা যাচ্ছে। আশা করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে স্লুইচ গেটের নির্মাণ শেষ হয়ে নৌপথে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে।