নান্দনিক পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের আদলে চাক্তাই–কালুরঘাট আউটার রিং রোড প্রকল্পে কর্ণফুলীর তীরঘেঁষে গড়ে উঠছে নতুন বিনোদন কেন্দ্র ‘কর্ণফুলী রিভারভিউ পার্ক’। চাক্তাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত রিং রোড হচ্ছে, যা উপকূলীয় বেড়িবাঁধ হিসেবে কাজ করবে। প্রকল্পটির পুরোপুরি কাজ শেষ হওয়ার আগেই কল্পলোক আবাসিকের পেছনের অংশে কর্ণফুলী নদীর তীরঘেঁষে এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে বেড়িবাঁধ, ব্লক নির্মাণের ফলে কর্ণফুলীর অপার সৌন্দার্য এখানে দাঁড়িয়ে এবং বসে উপভোগ করা যায়। নদীর পারে নির্মিত বেড়িবাঁধ ও ব্লকগুলো এখানকার সৌন্দর্যকে দ্বিগুণ করে তুলেছে। দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্থানটি। বিকেল হলেই নদীর পাড়ে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজন ও প্রিয়জনকে নিয়ে সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা।
নগর রক্ষার পাশাপাশি এটি এখন চট্টগ্রামবাসীর কাছে আকর্ষণীয় পর্যটন স্পটে পরিণত হয়েছে। এখনো পরিপূর্ণভাবে সকল কাজ শেষ না হলেও প্রকৃতির নির্মল পরিবেশ, কর্ণফুলীর স্নিগ্ধতা, গতিময়তা ও মাধুর্যের সবটাই দেখা যায় এখান থেকে। বিশেষ করে সরকারি ছুটির দিনে নতুন এই বিনোদক কেন্দ্রটি লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে।
প্রকল্পে সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এই বিনোদন কেন্দ্রে থাকবে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন, বেঞ্চ ও গ্যালারি, কিড জোন এবং ফুটওভার ব্রিজসহ নানা সুবিধা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে চরের মধ্য দিয়ে নির্মিত হচ্ছে সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ ও চার লেনের সড়ক। এক সময় বিশাল চর ছিল এই অংশে। এখন একরাশ স্নিগ্ধতায়ঘেরা অপার মাধুর্য লুকিয়ে আছে কল্পলোক আবাসিকের পেছনের অংশে কর্ণফুলী নদীর পাড়ে। নগরীর প্রায় ৬০ লাখ নগরবাসীর জন্য পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত ছাড়া আর কোনো উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র নেই। পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত নগরীর একেবারে দক্ষিণ–পশ্চিম প্রান্তে হওয়াতে নগরীর উত্তর–পূর্ব প্রান্তের লোকজনের জন্য যাতায়াত অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। বাকলিয়া এলাকায় কর্ণফুলীর তীরঘেঁষে নতুন এই পর্যটন স্পট এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের বিনোদনের অভাব পূরণ হবে বলে মনে করছেন নগর বিশেষজ্ঞরা।
নতুন ভাবে নির্মিত এই বেড়িবাঁধটি দেখতে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের মতো হওয়ায় অনেক পর্যটকের কাছে এটি কল্পলোক আবাসিক বিচ নামেও পরিচিত। চাক্তাই–কালুরঘাট সংযোগের এই রিং রোডে উঠলেই দেখা মিলে একরাশ স্নিগ্ধতাঘেরা অপার সৌন্দর্যের কর্ণফুলী। অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থানটি দিনদিন পর্যটকদের কাছে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। ধীরে ধীরে পর্যটক বাড়ায় নদীর আশপাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে অস্থায়ী বিভিন্ন দোকান–পাট, ফুড কোর্ট।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) নেওয়া ‘কালুরঘাট–চাক্তাই সড়ক ও বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প’ ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৭৭৯ কোটি টাকা।