চাকরির প্রলোভনে বাসায় এনে পতিতাবৃত্তি

পাহাড়তলীতে স্বামী-স্ত্রীর ফাঁদ ৯৯৯-এ ফোন, তিন যুবতী উদ্ধার

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৩ জুলাই, ২০২১ at ১০:১৮ পূর্বাহ্ণ

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরী, যুবতীদের এনে পতিতাবৃত্তির অভিযোগে নগরীর পাহাড়তলীতে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত শাহনাজ বেগম নামের এক নারীকে গ্রেপ্তার ও তিনজন ভিকটিমকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার বিকেলে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে পাহাড়তলী থানাধীন বাঁচা মিয়া রোডের হেলাল সাহেবের বাড়ির ৪র্থ তলার ভাড়া বাসায় ওই অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ওই নারীর বিরুদ্ধে মানবপাচার আইনে মামলা দিয়ে গতকাল সোমবার মহানগর হাকিম আদালতে প্রেরণ করা হলে আদালতের বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া শাহনাজ বেগম চট্টগ্রামের ভুজপুর থানাধীন হেঁয়াকো বাজারের মোহাম্মদপুর বড় বাড়ির জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহনাজ পুলিশকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে বলে জানিয়েছে পাহাড়তলী থানার ওসি হাসান ইমাম। জিজ্ঞাসাদে সে পুলিশকে জানায়, শাহনাজের স্বামী জাহাঙ্গীর দেশের বিভিন্ন স্থান হতে চাকুরি দেওয়ার কথা বলে কৌশলে যুবতী মেয়েদের চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। এরপর স্বামী-স্ত্রী মিলে তাদেরকে বাসায় আটকে রেখে জোর পূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। তারা প্রায় তিন বছর ধরে এই কাজের সাথে জড়িত বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। তারা কিছুদিন পর পর বাসা পরিবর্তন করে বিল্ডিংয়ের লোকজনের সাথে সখ্যতা করে এসব অপকর্ম করে আসছে।
পাহাড়তলী থানার ওসি হাসান ইমাম বলেন, ৯৯৯ এ থেকে ফোন পেয়ে দ্রুত বাঁচা মিয়া রোডে অভিযান চালিয়ে তিনজন ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। এসময় বাসার ভাড়াটিয়া শাহনাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহনাজ বেগম নামের ওই মহিলা স্বীকার করেছে তার স্বামী বিভিন্ন স্থান থেকে চাকুরিপ্রার্থী যুবতীদের সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে এনে বাসায় আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করতো। তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা হয়েছে। ওই মামলায় শাহনাজকে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তার স্বামী পলাতক রয়েছে। তাকেও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’ আটক শাহনাজ আর তার স্বামী দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে যুবতীদের চাকরির প্রলোভনে এনে বাসায় আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করতো। জাতীয় জরুরি সেবার ফোন পেয়ে অভিযান চালিয়ে শাহনাজকে আটক করা হয়েছে। তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলমকেও গ্রেপ্তার চেষ্টা অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় মানবপাচার আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম পূর্বকোণকে বলেন, গত ৩ মাস ধরে ওই বাসায় মেয়েদের আটকে রেখে পতিতাবৃত্তি করতে বাধ্য করছিল শাহনাজ বেগম ও তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম। গতকাল সেই বাসায় চিৎকার শুনে ৯৯৯ এ ফোন দেয় পার্শ্ববর্তী একলোক। পরে আমরা গিয়ে তিন মেয়েকে উদ্ধার করি। এছাড়া শাহনাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করি। তবে তার স্বামী জাহাঙ্গীর পালিয়ে যায়।
জিজ্ঞাসাবাদে শাহনাজ জানায়, তার স্বামী দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে সু-কৌশলে মেয়েদের তাদের বাসায় নিয়ে আসে। পরে সে আর তার স্বামী মিলে তাদেরকে জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। তারা প্রায় ৩ বছর ধরে এই কাজের সাথে জড়িত এবং তারা কিছুদিন পরপর বাসা পরিবর্তন করে বিল্ডিংয়ের মালিক অথবা বিল্ডিংয়ের কেয়ারটেকারের সাথে সখ্যতা করে এই কাজ পরিচালনা করে আসছে। এই বিষয়ে পাহাড়তলী থানায় মানব পাচার আইনে মামলা রুজু হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএবারও সীমিত পরিসরে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি
পরবর্তী নিবন্ধকোভিড টিকার জন্য খালেদার নিবন্ধন