চাঁদা না দিলে রাতে গাছ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা

খাগড়াছড়িতে ১ মাসে কাটা হলো ২০ হাজার গাছ

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

চাঁদাবাজি ও ভূমি বিরোধকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িতে ফলদ ও বনজ বাগানের গাছ কেটে দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। গত একমাসে জেলার রামগড়, গুইমারা ও পানছড়িতে অন্তত ৪৭ একর সৃজিত বাগানের ২০ হাজার গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। তবে বেশির ভাগ ঘটনায় আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনকে দায়ী করা হলেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ। পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঁশ ও কাঠ ব্যবসার উপর নির্ভরশীল অনেক মানুষ পাহাড়ি ভূমিতে সেগুন, গামারিসহ বিভিন্ন ফলদ বা বনজ গাছের বাগান গড়ে তুলেছে। এক্ষেত্রে রয়েছে তাদের লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ। অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ভূমি বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের লোকেরা চাঁদা দাবি করে। খাগড়াছড়ির রামগড়, গুইমারা, পানছড়িতে গত এক মাসে অন্তত ৪৭ একর ভূমির ২০ হাজার গাছ কেটে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। এতে এক কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বাগানিদের। এর মধ্যে চলতি মাসে ৬ সেপ্টেম্বর রাতে জেলার গুইমারার সিন্দুকছড়ি ইউনিয়নের পঙ্খিমুড়া এলাকার পরিত্যক্ত সেনা ক্যাম্পের পাশে মোঃ আবুল বশার, নিরব আলী ও সোহেল রানার সৃজিত বাগানে গাছ কেটে ফেলে দুবৃর্ত্তরা। এ ঘটনায় পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে দায়ী করে অন্তত ৩০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত তিন বাগান মালিক।
এর আগে খাগড়াছড়ির আব্দুর রহিম নামে এক কৃষকের ১০ একর টিলা জমিতে রোপণ করা প্রায় দেড় হাজার পেঁপে, মালটা ও আম গাছ কেটে বাগান সাবাড় করে দেয় দুর্বৃত্তরা। মধ্যরাতে উপজেলার মাহবুব নগর এলাকায়ও বাগানে দুর্বৃত্তরা গাছ কেটে দেয়। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে দাবি কৃষক আব্দুর রহিমের। এ ঘটনায় অন্তত ১০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানান আব্দুর রহিম।
এর আগে খাগড়াছড়ির রামগড়ে সাবেক ইউপি সদস্যের ১০ একর টিলা ভূমিতে সৃজিত মিশ্র ফল বাগানের প্রায় ৫ শতাধিক আম গাছ কাটে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পাহাড়ের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে দায়ী করে অন্তত ৩ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করেন বাগান মালিক।
এদিকে ২৬ আগস্ট রাতে জেলার পানছড়ির সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ওবায়দুল হক আবাদের নিজস্ব বাগানের সৃজিত বনজ ও ফলজ বাগান কেটে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে এলাকাবাসী। গত এক মাসে জেলায় প্রায় ৪৭ একর সৃজিত বাগানের ২০ হাজার গাছ কেটে ফেলেছে দুবৃর্ত্তরা। তবে এসব ঘটনায় কেউ আটক হয়নি।
খাগড়াছড়ি কাঠ ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি মো.কাশেম বলেন, যেখানে গাছ লাগানোর কথা সেখানে সৃজিত বাগান কেটে নিচ্ছে দুবৃর্ত্তরা। এতে মানুষের জীবনজীবিকা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি পরিবেশেরও অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। প্রশাসন দোষীদের দ্রুত আইনে আওতায় নিয়ে আসুক।
গাছের সাথে শত্রুতাকে দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করা হবে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবদুল আজিজ । তিনি বলেন, প্রতিটি ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি। একটিতে চার্জশিটও দেয়া হয়েছে। সময় লাগলেও আমরা দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধছেলের দায়ের কোপে পিতার মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধজামায়াতের নায়েবে আমির শামসুল ইসলাম ৪ দিনের রিমান্ডে