‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করায় মারুফা বেগম নেলী নামে এক সিনিয়র সহকারী সচিবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পত্র দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদে কর্মরত আছেন।
নগরের চকবাজার এলাকার আধুনিক চক সুপার মার্কেটের এক ব্যবসায়ী নেতার বাবাকে নাজেহাল করার অভিযোগ ওঠে মারুফা বেগম নেলীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার পরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়) বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পায়। তদন্ত প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা বেগম নেলী মোবাইল কোর্টকে অযাচিতভাবে কাজে লাগিয়েছেন। তিনি কাকে আটক করেছেন, কোন আইন প্রয়োগ করেছেন, সে বিষয়ে তার সম্যক ধারণা ছিল না। বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের এমন আচরণকে ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে দেখার সুযোগ রয়েছে’।
স্থানীয় সরকার পরিচালক (চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আজাদীকে বলেন, মাসখানেক আগে তদন্ত প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ মার্চ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন আধুনিক চক সুপার মার্কেট দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক মু. হাসনাইন মনজুর ওহী। এতে বলা হয়, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি চার গাড়ি পুলিশ সাথে নিয়ে এসে হাসনাইনের কাছ থেকে মার্কেটের সমিতির চাবি জোর করে কেড়ে নেন ম্যাজিস্ট্রেট। তার বাবার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে বাবাকে নাজেহাল করেন, সবকিছু তছনছ করেন এবং ‘জেলের ভাত খাওয়ানো’র হুমকি দেন। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট তার বাবাকে তুলে নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসের সামনে ছয় ঘণ্টা বসিয়ে রাখেন।’
অভিযোগটি আমলে নিয়ে ২৮ এপ্রিল তদন্তের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এরপর ৫ জুন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার পরিচালকের কাছে অভিযোগটি তদন্ত করে মতামতসহ প্রেরণের নির্দেশনা দেয় মন্ত্রণালয়। ১৭ জুলাই তদন্ত প্রতিবেদনটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে দাপ্তরিক পত্র দিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, মারুফা বেগম নেলীর বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, চট্টগ্রাম কর্তৃক প্রদত্ত তদন্ত প্রতিবেদন ও আনুষাঙ্গিক কাগজপত্র পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে নির্দেশক্রমে প্রেরণ করা হয়েছে।