চসিক পাচ্ছে ২৬৮ কোটি টাকা

খরচ হবে ৮৮ প্রকল্পে লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্ট

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১২ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

করোনা মহামারিতে ভেঙে পড়া স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং আয়বর্ধক প্রকল্প বাস্তবায়নে ২৬৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা পাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন ‘লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্ট (এলজিসিআরআরপি)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় মন্ত্রণালয় এ অর্থ দিচ্ছে।

 

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে ৮৮ প্রকল্পের প্রস্তাবনা তৈরি করেছে চসিক। চসিকের প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রকল্পের আওতায় ৩৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনঃসংস্কার করা হবে। এছাড়া ২২টি সড়কের ফুটপাতের উন্নয়ন, ১২টি কিচেন, টুলস ও ফিশ মার্কেট নির্মাণ করা হবে। একইসঙ্গে দুটি মার্কেটেরও সম্প্রসারণ করা হবে। প্রকল্পটির আওতায় বাটালি হিলে ওয়াচ টাওয়ার, সতীশ বাবু লেইন, সিডিএ লেইন, জেল রোড, সিনেমা প্যালেসের সামনে সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে। এছাড়া কয়েকটি সড়কে ওয়াকওয়ে, বাইসাইকেল লেন, ডিজিটাল ইনকিউবেশন সেন্টার, কার পার্কিং ও সবুজ এরিয়া কিডস জোন তৈরি করা হবে।

এ বিষয়ে সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী আজাদীকে বলেন, বরাদ্দ পেতে আমি নিজে যোগাযোগ করেছি। তিনি বলেন, টাকা পাওয়ার কিছু প্রক্রিয়া আছে। সেগুলো শেষ হলে বরাদ্দ পাব। বরাদ্দের টাকা কোন কোন খাতে খরচ করা হবে তা প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি মিটিং করেছি। সেখান থেকেও কিছু প্রস্তাবনা আসবে। সেগুলো ফাইনাল করা হবে। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে একটি সুন্দর ও পরিবেশবান্ধব নগরী গড়ে তোলা সম্ভব হবে। জানা গেছে, লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি প্রজেক্ট শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৫৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং বিশ্বব্যাংকের ঋণ থেকে ২ হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে। প্রকল্পের মধ্যে চট্টগ্রামসহ দেশের ১০টি কর্পোরেশনের জন্য বরাদ্দ আছে ৮২৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা।

৩৭ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংস্কার : ৩৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনঃসংস্কার করা হবে প্রকল্পের আওতায়। এর মধ্যে পাঁচটি আরবান স্বাস্থ্যকেন্দ্রও রয়েছে। এগুলো হচ্ছে সালেহ আহমদ সিটি কর্পোরেশন আরবান হেলথ সেন্টার, নরেশ মল্লিক সিটি কর্পোরেশন আরবান হেলথ সেন্টার, পাঁচলাইশ আবদুর রহিম সিটি কর্পোরেশন আরবান হেলথ সেন্টার, ওয়াজেদ আলী খান সিটি কর্পোরেশন আরবান হেলথ সেন্টার এবং মনজু পারভীন সিটি কর্পোরেশন আরবান হেলথ সেন্টার।

অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে নুরুল আমিন মিয়া সিটি কর্পোরেশন হেলথ সেন্টার, উত্তর কাট্টলী সিটি কর্পোরেশন হেলথ সেন্টার, এম এ মালেক সিটি কর্পোরেশন হেলথ সেন্টার এবং সালেহ জহুর সিটি কর্পোরেশন হাইস্কুল কাম প্রাইমারি হেলথ সেন্টার।

২২ ফুটপাতের উন্নয়ন : প্রকল্পে ২২টি সড়কের ফুটপাতের উন্নয়নেও প্রস্তাবনা আছে। এগুলো হচ্ছে ১৫ নং ওয়ার্ডের এস এস খালেদ রোড (ইস্পাহানি মোড় থেকে সার্সন রোডের মোড়), ২১ নং ওয়ার্ডের নূর আহমদ সড়ক (পশ্চিম পাশ) এবং মোমিন রোড ও জামালখান সড়ক, ২২ নং ওয়ার্ডের জুবিলী রোড, নূর আহমদ সড়ক, এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ রোড, ২৩ নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলি রোড, ২৩, ২৪ এবং ২৮ নং ওয়ার্ডের শেখ মুজিব রোড, ৪ নং ওয়ার্ডের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা সড়ক, ১৬ নং ওয়ার্ডের এনামুল হক রোডের উভয় পাশ, ৩৩ নং ওয়ার্ডের কবি নজরুল ইসলাম রোড ও নতুন ব্রিজ থেকে বশিউজ্জামান চত্বর হয়ে মেরিনার্স সড়ক, ৩২ নং ওয়ার্ডের মোমিন রোডের চেরাগী থেকে লালদীঘি পর্যন্ত ও সোহরাওয়ার্দী রোড, ৮ নং ওয়ার্ডের এভিনিউ সড়কের প্রবর্তক মোড় থেকে পাঁচলাইশ পর্যন্ত ও জাকির হোসেন রোডের জিইসি থেকে রেলগেট পর্যন্ত ৫ নং ওয়ার্ডের কালুরঘাট ব্রিজ থেকে আরাকান সংযোগ সড়ক, ২ নং ওয়ার্ডের বায়েজিদ বোস্তামী রোড, ৪০ নং ওয়ার্ডের সল্টগোলা মোড় কাঠগড় মোড় পর্যন্ত, ৪১ নং ওয়ার্ডের কাঠগড় জংশন থেকে টানেল মোড় পর্যন্ত, ১১ নং ওয়ার্ডের ফইল্যাতলী বাজার সড়ক এবং ২৬ নং ওয়ার্ডের বি ব্লিক সড়ক।

কিচেন মার্কেট : প্রকল্পের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ১০টি কিচেন মার্কেট, একটি টুলস মার্কেট, একটি ফিশ মার্কেট নির্মাণ করা হবে। এছাড়া দুটি মার্কেটের সম্প্রসারণ করা হবে।

প্রস্তাবিত কিচেন মার্কেটগুলো হচ্ছে পাহাড়তলী বাজার কিচেন মার্কেট, কাজিরহাট কিচেন মার্কেট, বেপারিপাড়া মোড় কিচেন মার্কেট, ফিরিঙ্গিবাজার কিচেন মার্কেট, বিবিরহাট কিচেন মার্কেট, বলিরহাট কিচেন মার্কেট, নিমতলা কিচেন মার্কেট, ফিরোজশাহ কিচেন মার্কেট, ২৬ নং ওয়ার্ড অফিস ভবন কাম কিচেন মার্কেট ও কমিউনিটি সেন্টার। এছাড়া ৩৭ নং ওয়ার্ডেও একটি কিচেন মার্কেট নির্মাণে প্রস্তাবনা আছে।

সম্প্রসারণ করা হবে বহদ্দারহাট কিচেন মার্কেট এবং দেওয়ানহাট পোর্ট সিটি কমপ্লেঙ। এছাড়া ৯ নং ওয়ার্ডে একটি বাণিজ্যিক ভবন কাম কমিউনিটি সেন্টার, বিবিরহাটে টুলস মার্কেট এবং পাথরঘাটায় নির্মাণ করা হবে ফিশ মার্কেট।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশত কোটি টাকার গম নিয়ে ভাসছে ১১টি লাইটারেজ
পরবর্তী নিবন্ধসমাবেশ সফল, দাবি বিএনপির