দায়িত্ব নিয়েই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও চেইন অফ কমান্ড শক্তিশালী করার ওপর জোর দিলেন সংস্থাটির নবনিযুক্ত প্রশাসক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, কোনো ধরনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে প্রতিষ্ঠান যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। বিশেষ করে কর্মকর্তা–কর্মচারীদের মধ্যে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা শক্তিশালী করে নগরবাসীকে সর্বোচ্চ মানের সেবা দেওয়ার বিষয়ে এগিয়ে যেতে হবে। দায়িত্ব নেওয়ার পর গতকাল মঙ্গলবার সকালে টাইগারপাস নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে চসিকের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রশাসককে চসিকের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করেন।
সভায় চসিকের সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী, উপ–সচিব আবুল হাশেম, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম ও প্রধান প্রকৌশলী শাহীন উল ইসলামসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের সচল করতে পারলে বিভিন্ন সেবা গ্রহণের জন্য নগরবাসীকে আর চসিকের প্রধান কার্যালয় পর্যন্ত আসতে হবে না। এজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের মধ্যে অঞ্চলসমূহ বণ্টন করে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা ও মনিটরিং করতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের মাঝে তথ্যের প্রবাহ বাড়াতে হবে। এজন্য চসিকের ওয়েবসাইটকে হালনাগাদ রাখতে হবে এবং প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিতে হবে। উন্নয়ন কাজের গুণগত মান নিশ্চিতে মনিটরিং বাড়াতে হবে। ঠিকাদার যথাযথভাবে মালামাল দিল কিনা, নির্দেশনা অনুসরণ করল কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রামকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে উল্লেখ করে প্রশাসক বলেন, সিডিএসহ সংশ্লিষ্ট সবগুলো প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে পানি প্রবাহ নিশ্চিতের মাধ্যমে জলাবদ্ধতামুক্ত চট্টগ্রাম গড়তে হবে। নগরকে পরিচ্ছন্ন ও আলোকিত রাখার কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গুর যে শঙ্কা সেটি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। মশা মারার ওষুধে যাতে কোনো ঘাটতি না পড়ে তা নিশ্চিত করতে হবে। জনগণকেও এ কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে মশাকে উৎস থেকে নির্মূলে কাজ করতে হবে।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়ে প্রশাসক বলেন, নগরের কিছু বর্জ্য চসিকের ব্যবস্থাপনার আওতার বাইরে থাকায় খাল–নালায় চলে গিয়ে পরিবেশের ক্ষতি করছে। এজন্য পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, লোকজন কাজ করছে কিনা সে ব্যাপারে তদারকি বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এখানে যা আয় হয় তা নগরবাসীর সেবায় ব্যয় হয়। আয় যদি ঠিকমতো না হয় তাহলে জনগণকে সেবা দেওয়া যাবে না। এজন্য রাজস্ব আয় বাড়াতে পদক্ষেপ নিতে হবে। চসিক পরিচালিত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতে সেবার মান বাড়ে সে ব্যাপারে কাজ করতে হবে।