চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এর অংশ হিসেবে চার ধরনের তথ্য চেয়ে চসিকে চিঠি দিয়েছে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আংটি চৌধুরী। গত সপ্তাহে এ চিঠি পাওয়ার বিষয়টি দৈনিক আজাদীকে নিশ্চিত করেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, যেসব তথ্য চাওয়া হয়েছে সবগুলো এক জায়গায় নেই। কিছু প্রকৌশল বিভাগ থেকে এবং কিছু হিসাব শাখা থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। সবগুলো একসঙ্গে হলে দুদকে পাঠিয়ে দেব। আশা করছি আগামী রোববারের দিকে পাঠাতে পারব।
এদিকে গত ২৮ আগস্ট চসিকে পাঠানো দুদকের চিঠিতে বলা হয়, নানা অনিয়ম করে ফ্ল্যাট ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে চার ধরনের তথ্যের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। সাত কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য–উপাত্ত সরবরাহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয় চসিকের প্রধান নির্বাহীর কাছে। দুদকের চাওয়া তথ্যের মধ্যে রয়েছে, চাকরিতে যোগ দেয়ার পর থেকে জসীম উদ্দিন ২০২৩ সালের জুলাই পর্র্যন্ত কী পরিমাণ বেতন, বোনাস বিল পেয়েছেন তার বছর ভিত্তিক বিবরণী। একইসঙ্গে সিটি কর্পোরেশনে জমা দেওয়া তার সম্পদ বিবরণীও দিতে বলা হয়েছে।
দুদক দুই ঠিকদারি প্রতিষ্ঠানের তথ্যও চেয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি প্রকৌশলী জসীমের ভাইয়ের বলে অভিযোগ আছে। এর মধ্যে সাইফুল ইসলামের মালিকানাধীন ‘ফাহিম কনস্ট্রাকশন’কে এ পর্যন্ত উন্নয়ন কাজের জন্য যেসব কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে তার রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়। এছাড়া দিদারুল ইসলামের মালিকানাধীন ‘আমিন ইনফ্রাস্ট্রাকচার অ্যাসফল্ট প্ল্যান্ট’ থেকে এ পর্যন্ত যেসব মালামাল ক্রয় করা হয়েছে তার রেকর্ডপত্রও চায় দুদক। চার ধরনের তথ্যের বাইরেও কোনো অতিরিক্ত তথ্য, মতামত ও মন্তব্য থাকলে তা ফরোয়ার্ডিং এ উল্লেখ করার জন্য অনুরোধ করা হয় দুদকের চিঠিতে।
চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী জসীম উদ্দিন মোবাইলে গতরাতে আজাদীকে বলেন, চিঠি আসতেই পারে। কত জনের বিরুদ্ধে কত অভিযোগ আসে। তবে তদন্তে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তো সেটাকে সত্য বলা যাবে না।
উল্লেখ্য, চসিকের এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন প্রকল্পের উপ–প্রকল্প পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন জসীম উদ্দিন। ‘চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় বিমানবন্দর সড়কসহ বিভিন্ন সড়ক উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন’ প্রকল্পটির আকার ২ হাজার ৪৯০ কোটি ৯৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা।