চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) ঝুলন কুমার দাশের দামপাড়া কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতা ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এ বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীরা ঝুলন কুমার দাশের অপসারণ অথবা পদত্যাগ দাবি করেন। এ সময় তিনি কর্মস্থলে ছিলেন না। পরে বিক্ষোভকারীরা চসিকের টাইগারপাস অস্থায়ী কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ৯ দফা দাবিতে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি দেন। এছাড়া মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী হোসেন আওরঙ্গজেবের কাছ থেকে পদত্যাগপত্রে ‘জোর’ করে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে খবর পেয়ে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে ছুটে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতা ঐক্য পরিষদের ব্যানারে যারা যান তাদের ফিরিয়ে আনেন। আজাদীকে মোহাম্মদ রাসেল আহমেদ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে কেউ যায়নি। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে তাদের নিয়ে আসি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দামপাড়া কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ঝুলন কুমার দাশকে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা দাবি করে তার পদত্যাগ চেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতা ঐক্য পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। বেশ কিছুক্ষণ তারা সেখানে অবস্থান নেন। তারা সরকার পতনের আন্দোলন চলাকালে ৩, ৪ ও ৫ আগস্ট সড়কবাতি বন্ধ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন এ সময়।
এদিকে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে দেওয়া স্মারকলিপিতে যেসব দাবি উল্লেখ করা হয় তার মধ্যে রয়েছে, ৩, ৪, ৫ আগস্ট তারিখে লাইট বন্ধের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া, চসিকের সকল বিধি বহির্ভূত নিয়োগকৃতদের বহিষ্কার করা, ঝুলন কুমার দাশের পদত্যাগ, সিটি কর্পোরেশনকে সিন্ডিকেটমুক্ত করা এবং কর্মকর্তাদের কমিশন বাণিজ্য বন্ধ করা, সিটি কর্পোরেশনের যেসব অফিসার কর্পোরেশনকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করে ব্যবস্থা নেওয়া, যে সকল অফিসার টেন্ডার কার্যক্রমের সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া এবং যে সকল কর্মকর্তা–কর্মচারী পদোন্নতি বঞ্চিত রয়েছেন তাদের ন্যায়সঙ্গতভাবে পদোন্নতি প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া।
এ বিষয়ে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম আজাদীকে বলেন, ফরমাল কিছু হয়নি। ওরা দাবি–দাওয়া নিয়ে এসেছে, পরে বলে ২৪ ঘণ্টা পরে আসবে। মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী হোসেন আওরঙ্গজেবের পদত্যাগ নিয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান তিনি।
হোসেন আওরঙ্গজেব আজাদীকে বলেন, আমাকে জোর করে স্বাক্ষর করতে বলে। আমি করেছি।
ঝুলন কুমার দাশ আজাদীকে বলেন, আমি ছুটিতে আছি। যারা এসেছে তাদের চিনি না, তারা পরিচিত কউ না। তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হলে আমাদের অফিসের বিষয়ে জানার কথা না। নিশ্চয়ই ব্যক্তিগত স্বার্থ উদ্ধারের সুযোগ নিতে চেয়েছে।
সড়কবাতি বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে বলেন, সড়কবাতি অন–অফ করেন মসজিদের ইমামগণ। এজন্য তাদের বছরে একবার ভাতা দেওয়া হয়। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিভাগের ৬টি অঞ্চল আছে, সেখানে অ্যাসিসটেন্ট ইঞ্জনিয়াররা দায়িত্ব পালন করেন। আমার জানা মতে তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।