চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত সদরঘাট, অভয়মিত্রঘাট ও বাংলাবাজার ঘাটের নিলাম কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। একই তথ্য নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা এসএম সরোয়ার কামাল। তিনি জানান, আপাতত আদালতের আদেশ অনুযায়ী তিনটি ঘাটের নিলাম কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
আইনজীবী মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের প্রত্যয়ন সূত্রে জানা গেছে, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে বিষয়টি দৈনিক কার্যতালিকায় শুনানির জন্য উপস্থাপিত হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ. কে. এম. আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সাঈদ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুল জারি করেন।
একই সঙ্গে, রুলের চূড়ান্ত শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত দরপত্র বিজ্ঞপ্তির কার্যকারিতা ৬ মাসের জন্য স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
দীর্ঘদিন ধরে কর্ণফুলী নদীর অভয়মিত্র ঘাট, সদরঘাট ও বাংলাবাজার ঘাটের ইজারা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও সাম্পান মাঝিদের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে।
মাঝিরা অভিযোগ করছেন, আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের হাতে ঘাট ইজারা দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। অথচ এসব ঘাটের ওপর শুধু ২১৪ জন সাম্পান মাঝিই নয়, প্রায় ৪,৫০০ মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল।
চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে চসিকের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করে মাঝিদের স্বার্থ রক্ষার দাবি জানানো হয়েছে। তারা অভয়মিত্র ঘাটের ইজারা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন।
চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন বলেন, ‘চসিক পেশাদার মাঝিদের অধিকার ক্ষুণ্ন করে বহিরাগতদের ইজারা দিতে চাইছে। এটি হলে কর্ণফুলীর মাঝিরা কর্মহীন হয়ে পড়বে, যা মানবিক বিপর্যয় ডেকে আনবে। তাই প্রকৃত মাঝিদের হাতে ঘাট থাকাই নিরাপদ। সে লক্ষ্যে আদালত ইতোমধ্যে আদেশ দিয়েছেন।’
কর্ণফুলী নদী সাম্পান মাঝি কল্যাণ সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি এসএম পেয়ার আলী বলেন, ‘২০০৩ সালের পাটনিজীবী নীতিমালা তোয়াক্কা না করে মাঝিদের ঘাটছাড়া করার ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা আশা করি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে মাঝিদের অধিকার রক্ষা করবে।’