চসিকের উপ-কর কর্মকর্তা আকবরকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড

২০ হাজার টাকা ঘুষসহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১ মে, ২০২৩ at ৯:০৯ পূর্বাহ্ণ

ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) রাজস্ব সার্কেল২ এর উপকর কর্মকর্তা আলী আকবরকে (বরখাস্ত) সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি পটিয়া উপজেলার গৈড়লার টেগুটা এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে। গতকাল চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আবদুল মজিদ এই রায় ঘোষণা করেন। এ সময় আলী আকবর কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমদ লাভলু আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ১০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আলী আকবরকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ১৬১ ধারায় তাকে দুই বছর ছয় মাস কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫() ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

আদালত সূত্র জানায়, নগরীর চান্দগাঁও থানাধীন রুপালি আবাসিক এলাকার ৫ তলা বাড়ির মালিক ছিলেন জনৈক রাজা মিয়া। ২০১১ সালের ১৬ জুন তার কাছ থেকে উক্ত বাড়িটি মো. হানিফ নামের অপর ব্যক্তি ক্রয় করেন। ক্রয় পরবর্তী বাড়িটির সিটি করপোরেশনের হোল্ডিং ট্যাঙ পরিশোধ এবং মালিকের নাম পরিবর্তনে কেয়ার টেকার মো. জামাল উদ্দীন সিটি করপোরেশনের রাজস্ব সার্কেল২ এর উপকর কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আলী আকবরের কাছে গেলে তিনি ৪০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। কেয়ার টেকার মো. জামাল উদ্দীন ঘুরাঘুরির পর নিরুপায় হয়ে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার বিষয়ে রফাদফা করতে বাধ্য হন। এরপর মো. জামাল উদ্দীন আলী আকবরকে ঘুষসহ হাতে নাতে ধরিয়ে দিতে ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুদক প্রধান কার্যালয়ের কাছ থেকে ফাঁদ মামলা পরিচালনার অনুমোদন প্রাপ্ত হয়ে আট সদস্য বিশিষ্ট একটি ফাঁদ দল গঠন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গণপূর্ত বিভাগের দুইজন সাক্ষী যথাক্রমে মো. ফৌজুল কবির এবং মো. সাহাবুদ্দিন তালুকদার এবং দুদকের সহকারী পরিচালক মো. হুমাউন কবিরের উপস্থিতিতে কেয়ার টেকার মো. জামাল উদ্দীনের আনীত ঘুষের ২০ হাজার টাকা যা ১০০০ হাজার টাকার ২০ টি নোট বিস্তারিত উল্লেখ করে একটি ইনভেনট্রি তালিকা প্রস্তুত করে ইনভেনট্রিকৃত টাকা মো. জামাল উদ্দীনকে ঘুষ প্রদানের নিমিত্তে ফেরত প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে একটি সাত সদ্য বিশিষ্ট ট্রেপ টিম গঠন করে ৭ ফেব্রুয়ারি চান্দগাঁও থানাধীন করপোরেশনের উক্ত রাজস্ব সার্কেল২ এর অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয় এবং ইনভেনট্রিকৃত ঘুষের টাকাসহ আলী আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আদালত সূত্র আরো জানায়, এ ঘটনায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়১ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক এইচ এম আখতারুজ্জামান বাদী হয়ে চান্দগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে একই বছরের ৩০ অক্টোবর আলী আকবরের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পরের বছর ২০১৮ সালের ১১ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন বিচারক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ৪ হাজার কোটি টাকার নতুন প্রকল্প সিডিএর
পরবর্তী নিবন্ধসমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন : আইএমএফ প্রধান