চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে (চসিক) কর্মরত অস্থায়ী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে কোন প্রক্রিয়ায় স্থায়ী করা হবে তা নির্ধারণে গতকাল সংস্থাটির বিভাগীয় প্রধানরা বৈঠক করেন। দুপুর সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আন্দরকিল্লা নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে বৈঠক চলে।
বৈঠক চলাকলে চসিক শ্রমিক ও কর্মচারী লীগের (সিবিএ) নেতৃত্বে অস্থায়ীরা কার্যালয়ের বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় তারা স্থায়ীকরণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পরে চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম উপস্থিত হয়ে এক মাসের মধ্যে স্থায়ীকরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি হওয়ার ঘোষণা দিলে শান্ত হন অস্থায়ীরা।
প্রধান নির্বাহী অস্থায়ীদের উদ্দেশে বলেন, সমস্যার সমাধান আরো আগে হওয়া উচিত ছিল। বিভিন্ন কারণে সমাধান করা যায়নি। আপনারা কর্তৃপক্ষকে এক মাস সময় দেন। এর মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে পারবেন। তবে এটা মনে রাখতে হবে, এ মুহূর্তে কর্পোরেশনে অস্থায়ী কর্মচারী অনেক। যে পরিমাণ পদের জন্য আমরা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন পেয়েছি তার চেয়ে বেশি সংখ্যক আপনারা কর্পোরেশনে সেবা দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, যারা স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়ায় থাকবে না তাদের বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে, বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে মেয়র মহোদয় আশ্বাস দিয়েছেন। কর্পোরেশনের প্রতিটি দপ্তরের প্রধানের সঙ্গে বসেছি। একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শীঘ্রই সমস্যার সমাধান করব। স্থায়ীকরণ কমিটিতে আপনাদের প্রতিনিধিও রাখা হয়েছে। কাজেই কাউকে বঞ্চিত করা হবে না।
এর আগে শ্রমিক নেতারা তাদের বক্তব্যে বলেন, ২০২০ সালে জারি হওয়া পরিপত্রে শ্রমিকের সর্বনিম্ন বেতন ১৮ হাজার টাকা নির্ধারিত হয়। কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন এ বেতন বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। অথচ একই পরিপত্রের আলোকে রেলওয়ে, চট্টগ্রাম ওয়াসা বেতন দিচ্ছে। কম বেতন দিয়ে কর্পোরেশনের শ্রমিকরা কীভাবে চলবে? তারা জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অস্থায়ীদের স্থায়ী করার দাবি করেন এবং যারা স্থায়ী হবে না তাদের পরিপত্রের আলোকে বেতন দেয়ার দাবি করেন।
বিভাগীয় প্রধানদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিবিএ সভাপতি ফরিদ আহমেদ। তিনি আজাদীকে বলেন, বৈঠকে সবাই স্থায়ীকরণের পক্ষে মতামত দেন। সরকার যে ৫ শতাংশ প্রণোদনার কথা বলেছেন তা স্থায়ীরা পাচ্ছে। কিন্তু অস্থায়ীদের বেতন বাড়েনি। তাই যারা স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়ায় আসবে না তাদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটা কার্যকর করা হবে।
চসিক অস্থায়ী কর্মকর্তা–কর্মচারী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সাজু মহাজন আজাদীকে বলেন, আমাদের কোনো কর্মসূচি ছিল না। সিবিএর নেতৃত্বে সবাই এসেছেন। এক মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হওয়ার যে আশ্বাস তা কার্যকর হবে বলে বিশ্বাস করে সবাই।