‘শোলে’, ‘চুপকে চুপকে’, ‘আয়ে মিলন কি বেলার’ মতো তুমুল জনপ্রিয় হিন্দি সিনেমার অভিনেতা ধর্মেন্দ্র দেওল জীবনের ৯০ বছর পূর্ণ করার মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি থাকতে চিরবিদায় নিলেন। ষাট ও সত্তরের দশকের বলিউড সুপারস্টার গতকাল সোমবার দুপুরে তার মুম্বাইয়ের বাড়িতে মারা যান। বিকেলে পবন হংস শ্মশানে পরিবারের সদস্য ও ভারতীয় চলচ্চিত্র অঙ্গনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শ্মশানে তাকে বিদায় জানাতে শোলে সিনেমায় তার সহঅভিনেতা অমিতাভ বচ্চন যেমন এসেছিলেন, নাতির বয়সী তরুণ অভিনয়শিল্পীরাও ছুটে আসেন।
ফুসফুসের জটিলতা নিয়ে ধর্মেন্দ্র ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অক্টোবর মাসের শেষ দিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুদিন আগে ভারতের মূল ধারার সংবাদমাধ্যমে তার মৃত্যুর ভুয়া খবর ছড়িয়ে পড়ে। তখন তার মেয়ে অভিনেত্রী এশা দেওল বলেছিলেন, ‘মিডিয়া ভুল খবর ছড়াচ্ছে। আমার বাবার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন।’ এরপর বাড়ি ফেরেন ধর্মেন্দ্র। কদিন আগেও একাধিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে, ধর্মেন্দ্র বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। এর মধ্যে গতকাল এলো তার মৃত্যুর খবর।
ধর্মেন্দ্রর পুরো নাম ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষাণ দেওল। ১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের নাসরালিতে তার জন্ম। দরিদ্র কৃষক পরিবারের এই সন্তানটির শৈশব থেকে সিনেমার প্রতি প্রবল টান অনুভব করতেন। ১৯৬০ সালে ফিল্ম ফেয়ার ‘ট্যালেন্ট প্রতিযোগিতায় জিতে’ পা রাখেন বলিউডে। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমা দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। সেই থেকে শুরু। ছয় দশকের বেশি সময় তিনশোর বেশি সিনেমায় অভিনয়ে অসামান্য প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন ধর্মেন্দ্র।
তবে ধর্মেন্দ্রর ক্যারিয়ার ঘুরে দাঁড়ায় রমেশ সিপ্পির কালজীয় সিনেমা ‘শোলে’ দিয়ে। ঠাকুরের ডাকে জয় আর বীরু নামের দুই তরুণ মাস্তানের ডাকাত ধরার সিনেমা হয়ে ওঠে বলিউডের ইতিহাস। সিনেমায় ধর্মেন্দ্র ও অমিতাভ অভিনীত জয় ও বীরুর বন্ধুত্ব আজও মনে রেখেছেন দর্শকরা। ২০১২ সালে ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘পদ্মভূষণে’ ভূষিত হন তিনি।
প্রেম করে বিয়ে করার কারণে দীর্ঘদিন চর্চায় ছিলেন ধর্মেন্দ্র ও হেমা মালিনী। ১৯৭০ সালে প্রথম দুজন পর্দা ভাগাভাগি করেন ‘তুম হাসিন ম্যায় জাওয়ান’ সিনেমায়। আর তাদের চার হাত এক হয় ১৯৭৯ সালে। তবে দুই অভিনেতার মন দেওয়া–নেওয়া যখন শুরু, তখন ধর্মেন্দ্র বিবাহিত এবং চার সন্তানের জনক।
ধর্মেন্দ্র ও হেমামলিনী একসঙ্গে কাজ করেছেন ৩০টির বেশি সিনেমায়। এই দম্পতির দুই মেয়ে এশা দেওল ও অহনা দেওল। ধর্মেন্দ্রর শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে তার দুই ছেলে সানি দেওল ও ববি দেওল, মেয়ে এশা দেওল, স্ত্রী হেমা মালিনীসহ পরিবারের ঘনিষ্ট বন্ধুরা উপস্থিত ছিলেন।












