অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুইয়া প্রথমবারের মত চট্টগ্রাম সফর করেন গতকাল। সকালে বিমান বন্দর থেকে তিনি সরাসরি যান জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। দেশের অন্যতম সেরা এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যুতে আগামী ২৯ অক্টোবর থেকে শুরু হবে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বাংলাদেশের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট। এরপর ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া বিপিএলের আসরও বসবে এই স্টেডিয়ামে। তাই এই স্টেডিয়ামের চলমান কাজ সমূহ দ্রুত সম্পন্ন করতে তাগিদ দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। দীর্ঘদিন ধরে এই স্টেডিয়ামের সংস্কার কাজ হয়নি তাই বিপিএলের আগে সংস্কার কাজগুলো সম্পন্ন করতে চান উপদেষ্টা। তিনি সকালে স্টেডিয়ামের মাঠ, মিডিয়া সেন্টারসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন। পরে সেখানকার কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় সভা করার কথা থাকলেও তা হয়নি। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের সংস্কারের জন্য ৯ দফা প্রস্তাবনা দেওয়া হয় বিসিবির পক্ষ থেকে। এসব প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে প্যাভেলিয়ন এবং মিডিয়া ভবনের ছাদে স্থাপিত ক্যানেপির প্রোফাইল শিট পরিবর্তন, বাবল ইন্সুলেশন পরিবর্তন এবং রং করা। প্রেসিডেন্ট বক্সের সংস্কার, ইন্টেরিয়রসহ আসবাবপত্র পরিবর্তন। প্যাভেলিয়ন ভবনের প্রেসিডেন্ট বক্স, হসপিটালিটি বক্স, কর্পোরেট বক্স, খেলোয়াড় ড্রেসিং রুমে পানি পড়া বন্ধ করতে এক্সপানসন জয়েন্ট মেরামত, তৃতীয় তলার সম্মুখস্থ অস্থায়ী কান্টিলিভার সংস্কার। প্রতিটি কক্ষের সামনের থাই গ্লাস সংস্কার ও ফার্নিচারসহ মেরামত। ড্রেসিং রুম, হসপিটালিটি বক্স এবং কর্পোরেট বক্সের এসি পরিবর্তন। প্যাভেলিয়ন ভবনের লিফট কোরটি সংস্কার ও লিফট স্থাপন, দুটি পোর্চ সংস্কার। পি এ সিস্টেম এবং মাঠের ট্রাইভিশন সংস্কার এবং আধুনিকায়ন। গ্যালারি সংলগ্ন চলাচলের রাস্তাটি সংস্কার, গ্যালারিতে অবস্থিত টয়লেট সংস্কার, গ্যালারিতে প্রবেশ পথে কলাপসিবল গেইট সংস্কার। স্টেডিয়ামের সীমানা প্রাচীরের উচ্চতা বাড়িয়ে কাটা তারের বেড়া নতুনভাবে নির্মাণ। বিদ্যমান ফ্লাড লাইটের সংস্কার এবং উন্নয়ন। ক্রীড়া উপদেষ্টা এসব প্রস্তাবনার যে সব কাজ শুরু হয়েছে তা দ্রুত শেষ করতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। যেহেতু দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী চট্টগ্রাম, আর ঢাকার পরেই চট্টগ্রামের অবস্থান তাই এই ভেন্যুটিকে আরো কিভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সেদিক খেয়াল রাখারও পরামর্শ দেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। বিশ্বের যেকোন দল বাংলাদেশে খেলতে এলে ঢাকার পরেই চট্টগ্রামই থাকে পছন্দের তালিকায়। তাই চট্টগ্রামের এই ভেন্যুটিকে আরো সুন্দরভাবে গড়ে তোলা উচিত বলেও মনে করেন ক্রীড়া উপদেষ্টা।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম পরিদর্শন শেষে উপদেষ্টা আসেন এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। সেখানে মাঠ ঘুরে দেখেন। মাঠের অবস্থা দেখে তিনি হতাশা ব্যক্ত করেন। পরে তিনি জেলা ক্রীড়া অফিসারকে ডেকে এই স্টেডিয়ামে কি কি সংস্কার করা প্রয়োজন তা দেখার নির্দেশ দেন। এম এ আজিজ স্টেডিয়াম নিয়ে পরে একটি পোস্ট করা হয় ক্রীড়া উপদেষ্টার ভেরিফাইড ফেসবুকে পেজে। ওই পোস্টে লেখা হয়, ‘আফসোসের নাম চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়াম। ১৯ বছর আগে সবশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ এখানে হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ নেই, মাঠের বেহাল অবস্থা।’ ‘গ্যালারি, মাঠ কিংবা প্রবেশপথ, তাকানো যাচ্ছে না কোনদিকেই। বিপিএলের সময় বিদেশি ক্রিকেটাররা এখানেও আসেন অনুশীলন করতে। এবার সংস্কারের ছোঁয়া পড়বে এখানেও।’