চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আর কয়েকদিন পরেই ভোটগ্রহণ। ইতোমধ্যে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছেন প্রার্থীরা। দিনরাত চলছে প্রচারণা। ২৬নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে এবারও কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আবুল হাশেম। আজাদীর পক্ষ থেকে তার নির্বাচন ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এলাকায় চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।
আজাদী : আপনি গত মেয়াদে কাউন্সিলর থাকাকালে এলাকাবাসীর জন্য উন্নয়নমূলক কী কাজ করেছেন?
আবুল হাশেম : আমি গত পাঁচ বছরে এলাকার উন্নয়নে আন্তরিকভাবে কাজ করেছি। এ সময় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বরাদ্দকৃত ৫৫ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে ৩০ কোটি টাকার কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আর বাকি কাজগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী শেষ হওয়ার পথে। আমাদের ২৬নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ডে বর্ষাকালে জনগণের দুর্ভোগের সীমা থাকত না। এলাকার নালা-নর্দমা ভরাট হয়ে নোংরা পানি রাস্তার উপর দিয়ে যাওয়ার ফলে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামীরা সহ সর্বস্তরের মানুষজনকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হতো। আমি গত নির্বাচনে আমার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এ সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। সেই সাথে নির্মাণ করা হয়েছে পর্যাপ্ত ব্রিজ ও কালভার্ট।
আজাদী : এলাকাবাসীর জন্য আর কী কী করেছেন?
আবুল হাশেম : আমার মেয়াদকালে এলাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার উন্নতি করেছি। সেই সাথে গ্যাস ও ওয়াসার পানি সংযোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে সহযোগিতা করেছি। নগরীর অন্যান্য এলাকার মতো হালিশহরেও ছিল মশার উপদ্রব বরং এখানে কিছুটা বেশিই বলা যায়। মশকনিধনে আমার নেয়া প্রয়োজনীয় ও সুপরিকল্পিত ব্যবস্থা অব্যাহত রয়েছে। এলাকায় স্থায়ী বোর্ড অফিস নির্মাণ করা হয়েছে। তাছাড়া পর্যাপ্ত ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণসহ ২৬নং ওয়ার্ডের প্রতিটি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ সুপরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
আজাদী : শিক্ষার ব্যাপারে কী ভূমিকা রেখেছেন?
আবুল হাশেম : সমাজকে এগিয়ে নিতে হলে শিক্ষাকে অবশ্যই গুরুত্ব দিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। তাই আমি আমার ওয়ার্ডে নারী শিক্ষার প্রসারে পর্যাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থা করাসহ তাদের কর্মসংস্থানেরও উদ্যোগ নিয়েছি। এর ফলে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়ে তাদের স্বাবলম্বী হওয়া সহজ হয়েছে। আমার গত মেয়াদকালে মহব্বত আলী সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে, যাতে এটিকে ভবিষ্যতে কলেজে রূপান্তর করা যায়।
আজাদী : আবার নির্বাচিত হলে এলাকাবাসীর জন্য কী কী করবেন বলে ভাবছেন?
আবুল হাশেম : আমি যদি আবার নির্বাচিত হই তাহলে আমার পরিকল্পনার মধ্যে আছে এলাকার অসম্পূর্ণ কাজগুলো সমাপ্ত করা। তারপর একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কম্পিউটারাইজড বোর্ড অফিস, দাতব্য চিকিৎসালয় ও কমিউনিটি সেন্টার স্থাপনের পরিকল্পনা আছে আমার। এলাকায় একটি মাতৃসদন হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, ময়লা আবর্জনা অপসারণে চলমান ডোর টু ডোর কর্মসূচিকে আরো গতিশীলকরণ, শিশুদের বিনোদনের জন্য পার্ক নির্মাণ, সাগরপাড়ে লিংক রোড সংলগ্ন স্থানে বিনোদনের জন্য আধুনিক পার্ক নির্মাণ, এলাকাবাসীর জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থাকরণ এবং ‘বি’ ব্লকের জাতীয় কবরস্থানকে সংস্কার ও উন্নয়নও রয়েছে আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনার মধ্যে।
আজাদী: নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
আবুল হাশেম : আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর মনোনীত প্রার্থী হিসেবে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি লাটিম প্রতীকে। আমার গত মেয়াদে আমি এলাকার উন্নয়নে যেভাবে কাজ করেছি তাতে আমি বিশ্বাস করি এলাকার জনগণ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবারও আমাকে নির্বাচিত করে তাদের সেবায় তাদের পাশে থাকার সুযোগ দেবেন।