চট্টগ্রাম ওয়াসার চলতি অর্থ বছরে রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি সিস্টেম লস কমে এসেছে। সংস্থাটির গত কয়েক বছরের রাজস্ব আয়ের তথ্যে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম লস ৩০ শতাংশে ঘুরপাক খাচ্ছে। এর নিচে নামে না। বরং কোনো কোনো সময় এর চেয়েও বেড়ে যায়। কিন্তু চলতি অর্থ বছরের রাজস্ব বিভাগের তথ্যে দেখা গেছে, গত মার্চ মাসে সিস্টেম লস ৩০ শতাংশ থেকে কমে ২২ শতাংশে নেমে এসেছে।
বছরের পর বছর চট্টগ্রাম ওয়াসার ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পানি অপচয় হওয়ায় গত অর্থবছরে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে ১০০ কোটি টাকার বেশি। গত এক দশকে সংস্থাটির সিস্টেম লস বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। অথচ ২০১৩–১৪ অর্থবছরে সিস্টেম লসের পরিমাণ ছিল ১৫ দশমিক ২৪ শতাংশ।
চট্টগ্রাম ওয়াসার বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, সংস্থাটি ২০২৩–২৪ সালে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৫১১ মিলিয়ন পানি উৎপাদন করলেও রাজস্ব আয় হারিয়েছে ৫২ হাজার ৯৬২ মিলিয়ন লিটার। এসব পানি নন–রেভিনিউ ওয়াটার হিসেবে শ্রেণিভুক্ত ছিল। অর্থাৎ প্রতি হাজার লিটারে ১৯ দশমিক ৩৭ টাকা গড় শুল্কসহ সংস্থাটি সম্ভাব্য রাজস্ব হারিয়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি।
ওয়াসার প্রকৌশলী ও রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১০ বছর ধরেই ৩০ শতাংশ হারে সিস্টেম লস হচ্ছে। সিস্টেম লসের বড় কারণ অবৈধ সংযোগের মাধ্যমে পানি চুরি, অবৈধ সংযোগ এবং কিছু মিটার পরিদর্শকের কারসাজি। প্রকৃত সিস্টেম লস ১০ শতাংশের বেশি নয়, যা হয় পুরোনো লাইন ও ছিদ্রের কারণে।
চট্টগ্রাম ওয়াসা বর্তমানে ১৩০০ কিলোমিটার পাইপ লাইনের মাধ্যমে দৈনিক প্রায় ৪৫ কোটি লিটার পানি সরবরাহ করে। তবে চট্টগ্রাম নগরীর ৩৫–৪০ শতাংশ এলাকা এখনও ওয়াসার পানি সরবরাহের নেটওয়ার্কের বাইরে রয়ে গেছে। কিন্তু চলতি অর্থ বছরে চট্টগ্রাম ওয়াসার রাজস্ব আয় বেড়েছে। সেই সাথে গত মার্চ মাসে সিস্টেম লসও কমে এসেছে।
এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা রুমন দে বলেন, চলতি অর্থ বছরে ওয়াসার রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি গত মার্চ মাসে ওয়াসার সিস্টেম লস ৩৫ শতাংশ থেকে ২২ শতাংশে কমে এসেছে।
দেশের রাষ্ট্রীয় চার পানি সরবরাহ সংস্থার এক তথ্যে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম লসই সবচেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে রাজশাহী ও খুলনা ওয়াসার সিস্টেম লসের হার ছিল যথাক্রমে সাড়ে ১৭ শতাংশ ও ২৯ শতাংশ। ২০২১–২২ সালে ঢাকা ওয়াসায় সিস্টেম লস ছিল ২০ শতাংশ। কিন্তু চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম লস ৩০ শতাংশের বেশি। মার্চ মাসে সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে চট্টগ্রাম ওয়াসার সিস্টেম লস কমার পাশাপাশি রাজস্ব আয় বাড়বে বলে জানান চট্টগ্রাম ওয়াসার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।