স্বাস্থ্যখাত সংস্কারে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন (শিক্ষানবিশ) চিকিৎসকরা। গতকাল দুপুরে মানববন্ধন করেন তারা। সারাদেশের সকল মেডিকেল কলেজের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে পূর্ণাঙ্গ রায় ও পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মবিরতি চলবে বলে জানান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। মানববন্ধন শেষে চমেক কলেজের অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেন ইন্টার্নরা।
পাঁচ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে– এমবিবিএস/বিডিএস ব্যতীত কেউ ডাক্তার লিখতে পারবে না। বিএমডিসির উচ্চ আইনের ভিত্তিতে করা এই আইন দ্রুত কার্যকর করতে হবে ও বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন ব্যতীত এমবিবিএস/বিডিএস চিকিৎসকদের চিকিৎসা প্রদান নিষিদ্ধ করতে হবে। পাশাপাশি ২০১০ সালের সরকারি ম্যাটস থেকে পাসকৃত ছাত্রদের বিএমডিসির রেজিস্ট্রেশন দেয়া বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
এই বিষয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করতে হবে। এমবিবিএস/বিডিএস ছাড়া কেউ ওটিসি লিস্টের বাইরে ড্রাগ প্রেসক্রাইব করতে পারবে না। রেজিস্ট্রার চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ছাড়া কর্মক্ষেত্রগুলো ওটিসি লিস্টের বাইরে কোনো চিকিৎসা করতে পারবে না।
স্বাস্থ্যখাতে বিনিয়োগের সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। ৫০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে সকল শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। অঞ্চলভিত্তিক স্বাস্থ্য কমিশন গঠন করে পূর্বের মতো সম্মুখ স্তরের চিকিৎসকদের নিয়োগ দিতে হবে। প্রতিবছর ৮ থেকে ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে স্বাস্থ্যখাতের ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে। সেইসাথে স্বাস্থ্যখাতের বিসিএস’র কার্যক্রম আরও দ্রুত করতে হবে।
সমস্ত মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল ও মাধ্যমিক সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজসমূহ বন্ধ করে দিতে হবে। ইতিমধ্যে পাস করা ম্যাটস শিক্ষার্থীদের স্যাকমো পদবি রেখে শুধুমাত্র মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ব্যবহারের ব্যবস্থা করতে হবে। এবং চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
চমেক ইন্টার্ন কাউন্সিলের সম্পাদক ডা. শাহরিয়ার হাসান মুন্না বলেন, আগামী ২৫ তারিখ বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিটের রায় আছে। তাই আমরা একটু অপেক্ষা করছি। তবে কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমরা আগামীকাল (আজ) মানবববন্ধন করবো না। তবে ক্লাশ বর্জন ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কাজে যোগ দিবেন না। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার তসলিম উদ্দিন বলেন, সারাদেশে ইন্টার্ন ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছে। সেটার অংশ হিসেবেই আমাদের মেডিকেলেও কর্মসূচি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তবে ইন্টার্নদের কর্মবিরতির কারণে আমাদের হাসপতালে সেবার কোনো ব্যাঘাত ঘটছে না। কারণ আমাদের ট্রেইনি চিকিৎসক রয়েছেন। এছাড়া রেজিস্ট্রার ও সহকারী রেজিস্ট্রারও রয়েছেন।