চবি সচল হবে কবে

তিন মাস ধরে বন্ধ ক্লাস-পরীক্ষাসহ একাডেমিক সব কার্যক্রম দ্রুত ক্লাসে ফিরতে চান শিক্ষার্থীরা

ইমাম ইমু | সোমবার , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৭:৫২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্বদ্যিালয়ে (চবি) প্রায় তিন মাস ধরে ক্লাসপরীক্ষাসহ একাডেমিক সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে একাডেমিক কার্যক্রম সচল হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো শুরু হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা কাটছে না। তবে গতকাল একযোগে সব হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর নিয়োগ হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে আগে আবাসিক হলগুলোর আসন নিয়ে দ্রুত কাজ করবেন, এরপর ক্লাসপরীক্ষা নিয়ে কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ।

জানা যায়, ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো প্রশাসন পদত্যাগ করে। এরপর থেকে প্রশাসনহীন ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। নানা জল্পনা কল্পনা শেষে গত বুধবার রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. ইয়াহ্‌ইয়া আখতারকে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপাচার্যের নিয়োগের পর উপউপাচার্যের নিয়োগের দাবিতে গতকাল মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং শিক্ষকদের সর্বজনীন পেনশন কাঠামোর একটি স্কিম নিয়ে ক্লাস বর্জনের কারণে কার্যত গত জুন মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ জুলাই থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এভাবে অনেক সময় চলে যায়। এখন উপাচার্য নিয়োগ হলেও অন্যান্য প্রশাসনিক পদ খালি রয়েছে। আমরা চাই দ্রুত প্রশাসনিক পদগুলোতে লোকবল নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম সচল করা হোক। এদিকে ক্লাসপরীক্ষা শুরু না প্রায় বিভাগে সেশনজটের আশঙ্কা রয়েছে।

চবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিন সুলতানা বলেন, অতি দ্রুত ক্লাস শুরু করা উচিত। তিন মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষার্থীরা একাডেমিক পড়াশোনার বাইরে। তাছাড়া দ্রুত সময়ের মধ্যে অনার্স শেষ করারও একটা বিষয় আছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা ক্লাসে ফিরতে চাই।

আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান উদ্দিন বলেন, আমরা যারা অনার্স জীবনের শেষ মুহূর্তে আছি তাদের জন্য তিন মাস সময়টা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের আগস্ট মাসে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আন্দোলনের কারণে স্থগিত হয়। সেই স্থগিত এখনো বহাল আছে। আজকে যেহেতু কার্যক্রম কিছুটা শুরু হয়েছে, আশা করছি শিগগিরই পরীক্ষায় বসতে পারব। যদি দ্রুত পরীক্ষা হয়ে যায় আমরা সামনে চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু করতে পারব।

চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের মাস্টার্স পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল জুলাই মাসে। এরপর শিক্ষকদের আন্দোলন এবং ছাত্রজনতার আন্দোলনের কারণে সেটি হয়নি। পরীক্ষা না হওয়ায় আমরা চাকরির বাজারে অনেক পিছিয়ে যাচ্ছি। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, দ্রুত আমাদের পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ আজাদীকে বলেন, আজকে (রোববার) যেহেতু প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে হলগুলোতে আসন বরাদ্দ দেওয়া হবে। এরপর পুরোদমে ক্লাসপরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর এখন আমাদের অনলাইনে ক্লাস চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৭ সালের পর থেকে হলের আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। এতদিন সবাই অবৈধভাবে হলে অবস্থান করছিল। এখন আসন বরাদ্দ হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে। এখানে রাজনৈতিক কোনো প্রাধান্য দেওয়া হবে না। একই কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভিডিও দেখে দোষীদের শনাক্ত, গ্রেপ্তারে অভিযান
পরবর্তী নিবন্ধএস আলমের সম্পত্তি ‘স্থানান্তর’, তদন্তের তথ্য চায় হাই কোর্ট