চবি শিক্ষক সমিতির দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন

৭ দিনের আল্টিমেটাম ভারপ্রাপ্ত সভাপতির

চবি প্রতিনিধি | মঙ্গলবার , ১৭ জানুয়ারি, ২০২৩ at ১০:৪৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেছেন। শিক্ষকদের জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন, সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনে গড়িমসিসহ বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রফেসর আব্দুল হক। এ সময় তাঁর সঙ্গে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির আরও পাঁচ সদস্যসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ যোগ দেন।

এ সময় উল্লেখিত দাবিতে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেন প্রফেসর আবদুল হক। এসময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে কর্মসূচির ঘোষণা দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অপরদিকে এ মানববন্ধনকে অবৈধ উল্লেখ করে তার প্রতিবাদ জানিয়ে একই সময়ে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ। তাঁর সঙ্গে সমিতির নির্বাহী কমিটির আরও তিন সদস্যসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ যোগ দেন। মানববন্ধন ইস্যুতে বর্তমান প্রশাসনের পক্ষে ও বিপক্ষে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে। এর মধ্যে প্রশাসনের পক্ষের যারা তারা সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে মানববন্ধন করেছেন আর বিরোধী পক্ষের শিক্ষকরা সভাপতির নেতৃত্বে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেছেন।

গতকাল সোমবার সকাল ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কার্যনির্বাহী পরিষদের ব্যানারে এ মানববন্ধন করেন সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রফেসর আব্দুল হক। এসময় তার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও এতে কার্যনির্বাহী পরিষদের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর মো. জসিম উদ্দিন, সদস্য ড. ফণী ভূসন বিশ্বাস, শোয়াইব উদ্দিন হায়দার, সৈয়দা করিমুন্নেছা ও হোসাইন মুহাম্মদ ইউনুস সিরাজী উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে প্রফেসর আব্দুল হক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষক সমিতির অব্যাহত দাবি সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরে সিন্ডিকেটে বিভিন্ন ক্যাটাগরির শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন সম্পন্ন না করে চরম ভারসাম্যহীন একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এক বছরের অধিক সময় ধরে পদোন্নতির জন্য আবেদনকৃত বেশ কিছু শিক্ষকের পদোন্নতি বোর্ড সভা সম্পন্ন না করে বারংবার সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের ব্যাপক হয়রানি ও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। আমাদের দাবির বিষয়ে আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে যদি সন্তোষজনক সমাধান না আসে তাহলে আমরা পরবর্তীতে আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করব।

একই সময় এই মানববন্ধনের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বর সাধারণ শিক্ষকবৃন্দ ব্যানারে পাল্টা মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন। এতে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক এস এম জিয়াউল ইসলাম, সদস্য প্রফেসর ড. নাজনীন নাহার ইসলাম ও ড. শারমিন মুস্তারি উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে প্রফেসর ড. সজীব কুমার ঘোষ বলেন, শিক্ষক সমিতির একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে। আলোচনা এবং আন্দোলনের মাধ্যমে চবি শিক্ষক সমিতি জাতির যে কোনো ক্রান্তিলগ্নে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। আমরা আলোচনাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেই। তারপরে আমরা আন্দোলনে যাই। আমি প্রশাসনের সাথে আলোচনা করে শিক্ষকদের দাবিদাওয়া গুলো আদায়ের চেষ্টা করেছি। আমরা দাবিদাওয়াগুলো নিয়ে শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী সভায় আলোচনা করে প্রশাসনের নিকট যাওয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির নেতৃত্বে কয়েকজন সদস্য কোনো ভাবেই দাবিগুলো নিয়ে প্রশাসনের নিকট যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামকে হারিয়ে প্রথম জয় কুমিল্লার
পরবর্তী নিবন্ধদোষ স্বীকারের পর বক্তা কাজী ইব্রাহিমের সাজা