সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতন চেয়ে গত ৩০ জুলাই ‘স্টেপ ডাউন হাসিনা’ লিখে ব্যক্তিগত একাউন্টে পোস্ট দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক মাইদুল ইসলাম। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও এ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আহ্বান জানিয়েছেন।
গত ৩০ জুলাই ফেসবুকে #Stepdownhasinaলিখে পোস্ট করেন চবি সমাজতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাইদুল ইসলাম। যা এখনো তার একাউন্টে দৃশ্যমান। গতকাল রবিবার চবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভায় এক সিদ্ধান্তে মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে উপাচার্যকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবদুল হক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে সিদ্ধান্তগুলো জানানো হয়। এতে বলা হয়, মাইদুল ইসলাম মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নামে বিভিন্ন কুৎসা রটনাসহ আপত্তিকর পোস্ট প্রদান করেন যা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক হিসেবে চরম অসদাচরণের শামিল এবং এ কারণে ২০২১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় হতে মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬ (সংশোধিত আইন, ২০০৯) অনুসারে দায়েরকৃত একটি মামলার সর্বশেষ অবস্থা অবহিত করার অনুরোধ সহকারে উপাচার্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বরাবর পত্র প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হক বলেন, ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্টে সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের গঠনমূলক সমালোচনা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি মাইদুল ইসলাম তার ফেইসবুক পোস্টে স্টেপ ডাউন হাসিনা লিখে সরকার পতনের জন্য জনগণকে সরাসরি উৎসাহিত করেছেন। সরকারের প্রধান যিনি থাকেন তিনি আমার মতের হতে পারেন অথবা নাও হতে পারেন। তাকে পতনের জন্য প্রকাশ্যে দেশবাসীকে আহ্বান জানানোর কোনো সুযোগ নেই। আমরা দেখেছি যে তিনি পোস্ট করেছেন আমাদের কাছে এর প্রমাণ আছে। এজন্য তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপাচার্য বরাবর আহ্বান জানিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়ে তিনি এমন আপত্তিকর পোস্ট দিতে পারেন না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সমাজতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাইদুল ইসলাম দেশের বাহিরে থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার ফেইসবুক ওয়ালে পোস্টটি দৃশ্যমান রয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগেও কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইফতেখার উদ্দিন আয়াজ। ওই মামলায় তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয় আদালত। গ্রেপ্তারের পর তাকে বিশ্ববদ্যিালয় থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।