চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রফেসর আবদুল হকের বিরুদ্ধে গবেষণা প্রকাশনা জালিয়াতি ও একই গবেষণা প্রবন্ধ দুইবার ব্যবহার করে পদোন্নতি নেওয়ার অভিযোগ করেছেন একই বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুহিববুল্লাহ। আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সভা। পরবর্তী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তবে অভিযোগের বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে মন্তব্য করেছেন অভিযুক্ত প্রফেসর আবদুল হক। সকল নিয়ম মেনে পদোন্নতি পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হওয়া তদন্ত কমিটির একটি চিঠি এসেছে। তদন্ত কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র–ছাত্রী নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আহ্বায়ক, জামাল নজরুল ইসলাম গণিত ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক প্রফেসর ড. অঞ্জন কুমার চৌধুরীকে সদস্য ও সহকারী প্রক্টর হাসান মোহাম্মদ রোমানকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।
এর আগে গত বছরের ৩১ জুলাই ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুহিববুল্লাহ বিভাগের সভাপতির মাধ্যমে চবির ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে প্রফেসর আবদুল হকের বিরুদ্ধে অভিযোগসমূহ তুলে ধরে একটি চিঠি দেন। ওই চিঠিও আজাদীর হাতে রয়েছে। ওই চিঠির বিষয়ে প্রফেসর মুহিববুল্লাহ উল্লেখ করেন, বিভাগীয় শিক্ষক আবদুল হক কর্তৃক গুরুতর একাডেমিক মিসকন্ডাক্ট, একই গবেষণা প্রবন্ধ ২ বার ব্যবহার করে সহযোগী অধ্যাপক পদে নিয়োগ ও অধ্যাপক পদে পদোন্নতির আবেদনে গবেষণা প্রকাশনা তালিকায় মারাত্মক জালিয়াতি ও অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে এবং বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সুপারিশ না করা সত্ত্বেও অধ্যাপক পদে বিষয়ে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ প্রসঙ্গে। এরপর ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্ল্যানিং কমিটির ৩৩৮তম (সাধারণ) সভার আলোচ্যসূচি ৫ (ক) নং সিদ্ধান্তটি চিঠিতে উল্লেখ করা হয়। এতে ২০১৮ সালে আবদুল হকের অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পদে আবেদনে দেয়া গবেষণা প্রবন্ধটির সাতটি অনিয়ম ও অসঙ্গতিও তুলে ধরা হয় ওই চিঠিতে।
অভিযোগকারী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুহিববুল্লাহ আজাদীকে বলেন, এটি গত বছরের ৩১ জুলাই আমরা প্রেরণ করেছি রেজিস্ট্রার বরাবর। এগুলো সব বিভাগীয় প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত। এর আগে ২০১৯ সালে তৎকালীন বিভাগীয় সভাপতি ড. ইদ্রিস আলম এমন অনিময় ও অসঙ্গতির অভিযোগ তুলেছেন। যেটার কপি অভিযোগের সংযুক্তিতে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রফেসর আবদুল হক আজাদীকে বলেন, এই বিষয়টি অনেক আগের। এটি এখন আসার কথা না। আমি সিন্ডিকেটে শিক্ষক প্রতিনিধি নিয়ে কথা বলেছি, এর কারণে আমাকে দমিয়ে রাখতে হয়ত এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, আমি পদোন্নতি আবেদনে সকল নিয়ম মেনেই আমি আবেদন করেছি। আমার গবেষণার ক্ষেত্রে সকল দিক ঠিক ছিলো। যদি সেটা ঠিক না–ই থাকতো আমার তো পদোন্নতি হতো না, তখনই সেটা আটকে যেত। আর উনারা যে গবেষণা প্রবন্ধটির কথা বলছেন সেটা বাদ দিলেও আমার পদোন্নতি হয়। এটা যদি মিথ্যা প্রমাণিত হয় তদন্ত করা লাগবে না আমি নিজেই চাকরি ছেড়ে দেব।