চবি পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতির বিরুদ্ধে ২০ শিক্ষকের ১২ অভিযোগ, অনাস্থা

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১ জুন, ২০২৫ at ১০:১৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি প্রফেসর চন্দন কুমার পোদ্দারের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়েছেন বিভাগের ২০ জন শিক্ষক। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্যদ্বয় ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন বরাবর চিঠি দিয়েছেন। শিক্ষকদের হয়রানি, একাডেমিক দায়িত্বে গাফিলতি ও প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচারিতার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে এর মধ্যে। গত ২৫ মে প্রশাসনের নিকট এ অভিযোগ জমা দেন ২০ শিক্ষক। গতকাল শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। অভিযোগগুলো হলো, শিক্ষকদেরকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানি, বিভাগে সেশনজট সংকটের ভয়াবহতা ও সেশনজট বাড়াতে ভূমিকা, শিক্ষার্থীদের অধিকার বঞ্চিত করা, মাস্টার্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে অনীহা, একাডেমিক ও প্ল্যানিং কমিটির সভা অনিয়মিতকরণ, শিক্ষকদের সমাবর্তন উপহার প্রদানে গড়িমসি, স্বেচ্ছাচারী প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত, শিক্ষা সরঞ্জাম বিতরণে অবহেলা, বিভাগীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থগিত, শিক্ষককর্মকর্তাদের নামফলক অপসারণ, বই ক্রয় না করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি সাধন।

জানা গেছে, পরিসংখ্যান বিভাগে মোট শিক্ষক রয়েছেন ২৫ জন। এর মধ্যে চারজন শিক্ষা ছুটিতে রয়েছে। অভিযোগকারী ২০ শিক্ষক হলেন প্রফেসর মো. এমদাদুল হক, প্রফেসর মো. ইমাম হোসেন, প্রফেসর মো. মনিরুল ইসলাম, প্রফেসর মো. রোকনুজ্জামান আজাদ, প্রফেসর মো. সাখাওয়াত হোসেন, প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সেলিম জাহাঙ্গীর, সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মালেক, সহযোগী অধ্যাপক ড. এ এইচ এম রাকিবুল মাওলা, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ভূঞা, সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মঞ্জুর মোর্শেদ, সহযোগী অধ্যাপক মোসা. জামিলুন নাহার, সহযোগী অধ্যাপক মো. শহিদুল হক, সহকারী অধ্যাপক সঞ্জীব ঘোষ, সহকারী অধ্যাপক মো. আলমগীর ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক জনার্দন মহান্ত, সহকারী অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক ফজলে এলাহী, প্রভাষক জাহানারা আক্তার কেয়া, প্রভাষক সুকান্ত চক্রবর্তী ও প্রভাষক শারমিন আকতার।

অভিযোগের বিষয়ে প্রফেসর মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভাগীয় কার্যক্রমে প্রফেসর চন্দন কুমার পোদ্দার একেবারেই মনোযোগী নন। তার নেতৃত্বে বিভাগে বর্তমানে এক ধরনের অরাজকতা বিরাজ করছে। অ্যাকাডেমিক ও প্ল্যানিং কমিটির মিটিং নিয়মিতভাবে না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অনেক সিদ্ধান্ত আটকে আছে। এমনকি সম্প্রতি একই দিনে দুই মিটিং ডেকে নিজস্ব এজেন্ডা চাপিয়ে দিয়েছেন, অন্যদের প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। তার এসব একক সিদ্ধান্ত ও গাফিলতির কারণে বিভাগ আজ ছন্নছাড়া, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর।

অভিযোগ অস্বীকার করে প্রফেসর চন্দন কুমার পোদ্দার বলেন, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমাকে চাপে রাখতেই এগুলো করা হয়েছে। তিনি বলেন, গত তিন মাস ধরে একাধিক বর্ষের পরীক্ষা থাকায় কিছু বিষয় সম্পন্ন করতে পারিনি, তবে অধিকাংশ অভিযোগই বানোয়াট।

এ বিষয়ে চবি রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগপত্র পেয়েছি; যেখানে অনাস্থার কথা বলা হয়েছে। বিষয়টি সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হবে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই আসবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকথা রেখেছে সেনাবাহিনী, মিলছে মেগা প্রকল্পের সুফল
পরবর্তী নিবন্ধজীবিত ভাইকে জুলাই আন্দোলনে মৃত দেখিয়ে মামলা