বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ১৫ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখসহ আরও ৪০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. আবু হাছান বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করেন। এই ঘটনায় মামলার তিন নম্বর আসামি চবি আইন বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মনিরুজ্জামান ক্যাম্পাসে আসলে শিক্ষার্থীরা ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। গতকাল শুক্রবার হাটহাজারী থানা তাকে আদালতে প্রেরণ করে।
মামলার আসামিরা হলেন, শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৌমেন দত্ত (২৭), সাবেক সহসভাপতি ইয়াসিন আরাফাত (২৭), চবি আইন বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মনিরুজ্জামান (২৩), সাবেক সহসভাপতি আবরার শাহরিয়ার (২৯), সাবেক সহসভাপতি মীর্জা খবির সাদাফ খান (২৮), সাবেক আইন সম্পাদক খালেদ মাসুদ (২৭), সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সাইদুল ইসলাম সাঈদ (৩২), সাবেক সহসভাপতি মিজান শেখ (৩১), বাংলা বিভাগের ১৮–১৯ শিক্ষাবর্ষের আকিব জাবেদ (২৬), ইতিহাস বিভাগের ১৯–১৯ শিক্ষাবর্ষের অনুপ সরকার আকাশ (২৬), সাবেক সহ–সম্পাদক তায়েব পাঠান (২৬), উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের তানভীর আলম আকাশ (২৪), আইন বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুজ্জামান ওমর (২৩), ইতিহাস বিভাগের ২০–২১ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ নাঈম (২৩) ও সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৮–১৯ আরাফাত রায়হান (২৫)। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি রাখা হয়েছে আরো ৩০ থেকে ৪০ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ জুলাই বিকালে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন বাদী মো. আবু হাছানসহ আরও ৭০/৮০ জন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার এলাকায় পৌঁছালে এজাহারনামীয় ১ নম্বর আসামির নেতৃত্বে ২ থেকে ১৫ নম্বর বিবাদীরা তাদের হাতে থাকা ধারালো রামদা চাপাতি, কিরিচ, লোহার রড, স্ট্যাম্প ও লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। ওই সময় ১ নম্বর আসামির হাতে থাকা স্ট্যাম্প দিয়ে বাদীর সাথে থাকা ভিকটিম মো. মাহাবুবুর রহমানের (সিএসই বিভাগ, সেশন ২০–২১) মাথায় আঘাত করে। ১৪ নম্বর আসামি তার হাতে থাকা কাঠের লাঠি দিয়ে মাহাবুবুর রহমানকে এলোপাথাড়ি মারধর করে। এ সময় অন্যান্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো দেশীয় অস্ত্র–শস্ত্র নিয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে এবং সবাইকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে বাদীসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শোর–চিৎকারে আশপাশের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে এলে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসা শেষে বাদী মো. আবু হাছান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ দেশ ও ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না বলে জানায়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী থানার ওসি মো. হাবিবুর রহমান আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় একজন আটক হয়েছে। আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি বাকিদের গ্রেপ্তারের।