চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দু’টি ব্যানার টাঙানোর ঘটনা ঘটেছে। যা নিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সরব হয়ে উঠছে। ৫ আগস্টের পর থেকে চবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের এমন আর কোন কার্যক্রম চোখে পড়েনি।
আজ রোববার ভোর রাতের দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে ধারণা করা হয়। তবে শিক্ষার্থীদের নজরে আসতেই এগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেল স্টেশন ও আবাসিক ছাত্র হল আলাওলের মূল ফটকে দু’টি ব্যানার টাঙানো হয়। এর মধ্যে রেল স্টেশনে টাঙানো একটি ব্যানারে ইংরেজিতে লেখা ‘জনতার অরাজকতাকে ভিত্তি করে গঠিত অবৈধ আইসিটি আইনের অস্ত্রায়ন বন্ধ করো, শেখ হাসিনার প্রহসনমূলক বিচার বন্ধ করো’ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
এই ব্যানারের এক পাশে বর্তমানে ভারতে পলাতক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি রয়েছে।
অন্য ব্যনারটিতে লেখা ‘সেন্টমার্টিন ও চট্টগ্রাম বিদেশীদের হাতে দিব না। জাগো বাঙালি জাগো, মাতৃভূমি রক্ষা করো। শেখ হাসিনা আসবে বাংলাদেশ হাসবে’- এই ব্যানারে শেখ মুজিব, শেখ হাসিনা, এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী ও মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছবি রয়েছে।
এদিকে ছাত্রলীগের এ তৎপরতায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন এটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। তারা এখনও ফ্যাসিস্টের লালন পালন করছে। না হলে ক্যাম্পাসে কীভাবে ছাত্রলীগ এমন কাজ করতে পারে!!
কলা অনুষদের শিক্ষার্থী রাতুল বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের ব্যানার টাঙানো অত্যন্ত উদ্বেগজনক ও পরিকল্পিত। এটি ক্যাম্পাসের স্থিতিশীল পরিবেশ নষ্টের অপচেষ্টা। দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় থাকা কিছু ছাত্রলীগার এখনো সক্রিয় রয়েছে। প্রশাসনের নীরবতা তাদের আরও বেপরোয়া করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ক্যাম্পাসের শান্তি বজায় রাখতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা জরুরি।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি ফেসবুকে লেখেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’টি স্থানে রাতের আঁধারে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ব্যানার টাঙানো হয়েছে। তারা ভুলে গেছে এটা শহিদ তরুয়া ও শহিদ ফরহাদের রক্তসিক্ত পবিত্র ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের কোনো ছাড় নয়।
জানতে চাইলে শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, সাবেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে কর্মরত এবং ক্যাম্পাসে অবস্থান করা ছাত্রলীগ কর্মীরাই ব্যানারগুলো টাঙিয়েছে। আমরা অনেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট দাবি জানিয়েছিলাম যে, পুরো ক্যাম্পাস যেন সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়। কিন্তু তারা সেটা শোনেননি।
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গাফলতির কারণে ছাত্রলীগ এ কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। আমরা এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার চাই এবং এ ঘটনায় আমরা সাংগঠনিকভাবে কর্মসূচী পালন করবো।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী জানান, আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই ব্যানারগুলো ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা করছি।












